• তেহট্টে চাঁদেরঘাট জুনিয়র বালিকা বিদ্যালয়ে স্থায়ী শিক্ষিকা মাত্র দু’জন
    বর্তমান | ১৮ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, তেহট্ট: তেহট্ট  থানার চাঁদেরঘাট জুনিয়র বালিকা বিদ্যালয়ে মোট ৪৬জন ছাত্রীর জন্য রয়েছেন মাত্র দু’জন  শিক্ষিকা। সেজন্য গ্রামবাসীদের অনুরোধে স্থানীয় তিনজন যুবক-যুবতী বিনা পারিশ্রমিকে স্কুলের ছাত্রীদের পড়াচ্ছেন। গ্রামবাসীরা স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকার জন্য আবেদন জানানোই সম্প্রতি একজন অঙ্কের শিক্ষিকা এসেছেন। তাঁকে নিয়ে স্কুলে এখন শিক্ষিকার সংখ্যা দু’জন।  শিক্ষাদপ্তরে বারবার জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।  স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁদেরঘাট  সহ আশেপাশের এলাকার চাহিদা ছিল একটি বালিকা বিদ্যালয়ের। এলাকায় উচ্চ বিদ্যালয় থাকলেও ছিল না কোনও বালিকা বিদ্যালয়। দীর্ঘদিন এই দাবি এলাকার বাসিন্দারা প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে জানিয়ে ছিলেন। সেই দাবি পুরণ হয় তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর। ২০১১ সালে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের হাত ধরে এই এলাকায় একটি জুনিয়র গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়। সেই সময় এই স্কুল শুরু হয়েছিল ৩৪ জন ছাত্রীকে নিয়ে। তখন চারজন শিক্ষকের পদ তৈরি হয়েছিল শিক্ষাদপ্তরের পক্ষ থেকে। প্রতিষ্ঠার সময় স্কুলে কোনও শিক্ষক ছিল না। এরপর ধীরে ধীরে এই স্কুলের ছাত্রী সংখ্যা বাড়তে থাকে। ২০১৫ সালে ধোপট্ট হরিজন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এক শিক্ষিকাকে এখানে নিয়ে আসা হয়। সেই সময় স্কুলে ছিলেন একজন গেস্ট শিক্ষক। তিনি ২০১৬ সালে অবসর নেওয়ার পর একজন শিক্ষিকা দিয়েই স্কুল চলছিল। এই স্কুলে কোনও পার্শ্বশিক্ষক নেই। মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য গ্রামবাসীরা এলাকার উচ্চশিক্ষিত ছেলেমেয়েদের ওই স্কুলে পড়ানোর জন্য বলেন। এখন এলাকার দু’জন যুবক অচিন্ত্য বিশ্বাস, মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল ও সঙ্গীতা প্রামাণিক নামে এক যুবতী  স্কুলে ছাত্রীদের পড়ান।  স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমান ছাত্রীর সংখ্যা ৪৬। এবছর মাত্র চারজন ছাত্রী পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। গতবছর কোনও ছাত্রী পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি না হওয়ায় এবছর ষষ্ঠ শ্রেণির কোনও ছাত্রী নেই। এলাকার বাসিন্দা তুহিন মণ্ডল  বলেন, মানিকবাবুর চেষ্টায় এই স্কুল তৈরি হয়েছে। শিক্ষকের পদ অনুমোদিত হলেও কোনও শিক্ষক নেই। আমরা এই সমস্যার কথা মানিকবাবুকে বলেছিলাম। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। এখন আমরা গ্রামের মেধাবী ছেলেমেয়েদের অনুরোধ করেছিলাম তাঁরাই পড়াচ্ছেন।  স্কুলের শিক্ষিকা সোমা জোয়ারদার বলেন, আমাকে স্কুলের সবকিছু দেখতে হয়। এই বছর একজন অঙ্কের শিক্ষিকা এসেছেন। বাধ্য হয়ে আমি গ্রামের মানুষজনকে ছাত্রীদের লেখাপড়া যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় তার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে তিনজন এখন বিনা পারিশ্রমিকে পড়ান। এই বিষয়ে শিক্ষাদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, বিষয়টি আমি উপর মহলে জানিয়েছি। তারা দেখছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)