• সূচসুদ্ধ বাড়ি ফিরল সদ্যোজাত! নামী বেসরকারি হাসপাতালের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্য কমিশন
    প্রতিদিন | ১৯ জুন ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জের সূচ ঢুকে রয়েছে সদ্যোজাতর পিছনে। খেয়ালও করেননি কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স কেউই। সেই অবস্থাতেই একরত্তিকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ধরা পড়তে পরোক্ষে দোষ চাপিয়েছে সদ্যোজাতর মায়ের ঘাড়ে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বেসরকারি হাসপাতালের উপর দায় চাপিয়ে জানিয়েছেন, একজন মা তার সন্তানের শরীরে সূচ ঢুকিয়ে দিয়েছে, এটা মানা সম্ভব নয়।

    ঘটনার সূত্রপাত গত মাসে। সিএমআরআই হাসপাতালে ২৪ এপ্রিল যমজ সন্তানের জন্ম দেন কাজল শাহ। ডায়মন্ড হারবার রোডের সিএমআরআই হাসপাতালে আইভিএফ পদ্ধতিতে তাঁর যমজ সন্তান হয়। দু’দিন পরে হাসপাতাল থেকে মাকে জানানো হয়, একটি শিশুর পিছনে একটা ছোট্ট জায়গা লাল হয়ে রয়েছে। কী হয়েছে সেখানে? জানতে আলট্রাসোনোগ্রাফি করা হয়। যদিও তাতে কিছু ধরা পড়েনি। ২৭ এপ্রিল মায়ের ছুটি হয়ে যায়। ৪ মে ছুটি দেওয়া হয় শিশুটিকে। শিশুর মা জানিয়েছেন, “বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় পিছনটা লাল হয়ে ছিল। হাসপাতাল আমাদের জানায়, ইউএসজিতে কিছু ধরা পড়েনি। এমআরআই করলে হয়তো জানা যাবে। কিন্তু তেরো দিনের বাচ্চার এমআরআই করা বিপজ্জনক। আমরাও তখন আর জোর করিনি।”

    ওই জায়গায় অ্যান্টিবায়োটিক প্যাচ দিয়ে দেওয়া হয়। গত ৬ তারিখ প্যাচ বদলে নতুন করে লাগাবেন ভেবে পুরনো প্যাচ খুলে মা দেখেন, বাচ্চার শরীরের ওই লাল জায়গাটা থেকে রক্তপাত হচ্ছে। ফোস্কার মতো ফুলে রয়েছে। ৭ তারিখ তড়িঘড়ি শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার পরিবার। ওপিডিতে দেখা যায়, শিশুটির লাল জায়গাটা থেকে কিছু একটা বেরিয়ে আছে। দেখা যায়, সেটা একটা ইঞ্জেকশনের সূচ। হাসপাতালের বক্তব্য, “আমরা তো ইউএসজি করে কিছু পাইনি।” পরোক্ষে হাসপাতালের বক্তব্য, মা-বাবাই সূচ ফুটিয়ে দিয়েছে।

    এমন অভিযোগ পেয়ে স্তম্ভিত স্বাস্থ্য কমিশন। কমিশনের সদস্যরা বলছেন, “দশ বছর বাচ্চা হয়নি। আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তানের জন্ম দিয়ে সেই মা তেরো দিনের বাচ্চার শরীরে সূচ ফুটিয়ে দেবেন! এমনটা মানা যায় না।” স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের ফুল বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে। ওই ৮৭ হাজার টাকা শিশুটির পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছিল, অবিলম্বে তা ফেরত দিতে বলা হয়েছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)