কাশ্মীরের রাজবাগ থেকে উদ্ধার করা হল বন্ধ লংকাপাড়া চা বাগানের ৩ পরিযায়ী শ্রমিককে
বর্তমান | ২১ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: ভূস্বর্গ কাশ্মীরে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে গিয়ে চরম দুর্দশায় পড়েছিলেন বীরপাড়া থানার বন্ধ লংকাপাড়া চা বাগানের কপিল তামাং, তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি ছেত্রী ও শ্যালিকা সন্দিয়া ছেত্রী। মোটা টাকার কাজের টোপ দিয়ে দালালচক্র তাঁদের কাশ্মীরের রাজবাগে এক বিশাল বাড়িতে পাঠিয়েছিল। সেই বাড়িতে সাফাইয়ের কাজে লাগানো হয়েছিল তাঁদের। শুধু তাই নয়। তিন জনকে জোর করে টয়লেট সাফাইয়ের কাজ করতেও বাধ্য করা হয়েছিল। বিনিময়ে বাসি পচা খাবার দেওয়া হতো তাঁদের। কথা না শুনলে চলত অকথ্য মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার। শেষ পর্যন্ত বীরপাড়া থানার সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার তিন জনই বাড়ি ফিরলেন।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মোটা টাকার টোপ দেখিয়ে দালালচক্র দু’মাস আগে বন্ধ বাগানের ওই তিন জনকে নিয়ে যায় কাশ্মীরের রাজবাগের ওই বিশাল বাড়িতে। কিন্তু সেখানে কপিল তামাংরা জানতে পারেন দালালচক্র তাঁদেরকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিল। কাজের বিনিময়ে তাঁদের কোনও বেতন বা মজুরি কিছুই দেওয়া হতো না। ওই বাড়িতে যাওয়ার পর প্রথমেই তাঁদের মোবাইল ফোনগুলি কেড়ে নিয়ে রেখে দেওয়া হয়েছিল।
কিন্ত পুলিসের সহযোগিতায় কীভাবে উদ্ধার হলেন তাঁরা? জানা গিয়েছে, একদিন কপিল তামাং বুদ্ধি করে অন্য একজনের ফোন থেকে বীরপাড়ায় তাঁর পরিচিত যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিশাল গুরুংকে ফোন করেন। ফোন পেয়েই বিশালবাবু আভিযোগপত্র নিয়ে বীরপাড়া থানার ওসি নয়ন দাসের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ পেয়েই পুলিস কাশ্মীরের রাজবাগ থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় থানার উদ্যোগে উদ্ধার হয় তিন জন।
কিন্তু উদ্ধার হলেও সমস্যা দেখা দেয় তিন পরিযায়ী শ্রমিকের হাতে টাকা পয়সা না থাকায়। তাই বীরপাড়া থানা থেকে অনুরোধ যায় রাজবাগ থানায়। শেষ পর্যন্ত ওই থানার সহযোগিতায় তিন জন ট্রেনে বাড়ি ফেরেন। বিশালবাবু বলেন, দালালচক্রের খপ্পড়ে পড়ে তিন পরিযায়ী শ্রমিক চলে গিয়েছিল কাশ্মীরে। তাঁদেরকে বাড়ি ফেরাতে সহযোগিতা করার জন্য বীরপাড়া ও রাজবাগ থানাকে ধন্যবাদ। আলিপুরদুয়ারের পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, কাশ্মীর থেকে তিন পরিযায়ী শ্রমিককে আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি।