কলেজে স্নাতকে ভর্তির নিয়মে লেখা আছে, মাধ্যমিকের সাতটি বিষয়ে পাশ করতেই হবে। কিন্তু রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের কেন্দ্রীয় ভর্তি পোর্টাল মারফত আবেদনকারীদের একাংশের দাবি, মাধ্যমিকে সাতটি বিষয়ে পাশ নম্বর পেয়েও কিছু ক্ষেত্রে কলেজে ভর্তির ফর্ম পূরণ যাচ্ছে না। বিরাটির খালাসিকোটা গার্লস স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পাশ ছাত্রী রুকায়া সুলতানা যেমন স্নাতকে ইতিহাস নিয়ে পড়ার ফর্ম ভরতে গিয়ে মুশকিলে পড়েছেন। মাধ্যমিকে অঙ্কে ২৫ পেয়েছিলেন তিনি। নিয়মমাফিক মাধ্যমিকে যে কোনও বিষয়ে লিখিত ও মৌখিক মিলিয়ে ২৫ পেলেই পাশ ধরা হয়। কিন্তু রুকায়া জানাচ্ছেন, ফর্ম ভরার সময়ে ২৫ লেখার পরে তা ‘এরর’ বা ভুল বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। দুই ২৪ পরগনা, কলকাতার বিভিন্ন কলেজের আবেদনকারী থেকে নদিয়া, দুই মেদিনীপুরের কোনও কোনও শিক্ষার্থীও ফর্ম ভর্তি করতে গিয়ে সমস্যার কিছু অভিজ্ঞতা স্থানীয় কলেজ কর্তৃপক্ষ বা হেল্পলাইনের গোচরে এনেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
রাজ্যের স্নাতক স্তরের বড় অংশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৭টি সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬০টি কলেজেই ওই পোর্টালটির মাধ্যমে ভর্তি করা হচ্ছে। কলেজগুলিতে ভর্তির সময়ে অনিয়ম বন্ধ করতে এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের দাপট খর্ব করে স্বচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি কার্যকর করতেই চালু হয়েছে অনলাইন ভর্তি ব্যবস্থা। তবে বিশেষত প্রত্যন্ত এলাকার কলেজগুলিতে ফর্ম ভরার কিছু সমস্যা উঠে এসেছে। ঝাড়গ্রামের বিবেকানন্দ শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ উমা ভৌমিক জানাচ্ছেন, মাধ্যমিকে ৩৩এর কম নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীর ফর্ম ভরার সমস্যা হচ্ছে বলে কয়েকটি অভিযোগ তাঁদের কাছে এসেছিল। তাঁদের পোর্টালের হেল্পলাইনে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়। এর পরে ওই সমস্যা আর শোনা যায়নি। মাধ্যমিকে এখন কোনও বিষয়ে লিখিত ও প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা বাবদ মোট ২৫ পেলেই পাশ ধরা হয়। কিন্তু পোর্টালে কিছু ক্ষেত্রে ৩৩-এরকম নম্বর থাকলে সমস্যা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
বিরাটিতে শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে সহায়তায় যুক্ত একটি কেন্দ্র থেকে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ফর্ম ভরতে না পেরে ১৫ জন পড়ুয়া ফিরে যান। কলকাতার বেলগাছিয়ার রিয়া খাতুন, অঙ্কিতা তালুকদারেরও একই সমস্যা হয়েছে। বর্ধমানের একটি কোচিং সেন্টারেও ফর্ম ভরার সমস্যা অনেকের নজরে আসে।
ভর্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের এক কর্তা নম্বর নিয়ে ধন্দে পোর্টালে সমস্যার কিছু অভিযোগের কথা স্বীকার করছেন। তবে তাঁর মতে, “সমস্যা আপাতত নিয়ন্ত্রণে।” তাঁর কথায়, “কিছু ক্ষেত্রে ফর্ম ভরার সময়ে শিক্ষার্থীরাও ভুল করছেন। খবর পেয়েছি, কেউ হয়তো বিষয়টির থিয়োরি ও প্র্যাক্টিক্যাল দু’টি ভাগ থাকলে বা না থাকলে ঠিক জায়গায় ‘টিক’ চিহ্ন দিচ্ছিলেন না। এর ফলেও ফর্ম ভরার প্রক্রিয়া থমকে যেতে পারে। নতুন করে নম্বর নিয়ে সংশয়ের অভিযোগ দু’-এক দিনেআর আসেনি।”