• ইজরায়েলে আটকে তেহট্টের শতাধিক যুবক, থেমে যাক যুদ্ধ চাইছে পরিবার
    প্রতিদিন | ২৩ জুন ২০২৫
  • রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। মিসাইল হানা চলছে দুই দেশের মধ্যে। আমেরিকাও ইরানের উপর হামলা চালিয়েছে। যুদ্ধের উত্তাপ আরও বাড়ছে। সেই অবস্থায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে নদিয়ার তেহট্ট এলাকার একাধিক পরিবারের। কারও ছেলে, কারও স্বামী কর্মসূত্রে এই মুহূর্তে আটকে আছেন ইজরায়েলে। বেতাইয়ের লালবাজার এলাকা থেকেই ৩০ জন ইজরায়েলে এই মুহূর্তে রয়েছেন। জানা গিয়েছে, বেতাই ১ ও ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকা থেকে প্রায় শতাধিক যুবক যুদ্ধবিধ্বস্ত সেই দেশে আছেন। ভারত সরকার তাঁদের দেশে ফেরাতে কোনও পদক্ষেপ করুক। তেমনই চাইছে ওইসব পরিবার। প্রশাসনের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হচ্ছে বলে খবর।

    পরিবারের লোকজন মোবাইল ফোনে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন তাঁদের সঙ্গে। ভিডিওকলে মাঝেমধ্যে কথা হচ্ছে। কবে তাঁরা দেশে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারবেন? সেই কথা কেউই কিছু বলতে পারছেন না। ফলে দুশ্চিন্তা আরও গাঢ় হচ্ছে ওইসব পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। অতিরিক্ত রোজগারের আশায় প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ করে এজেন্টদের মাধ্যমে তাঁরা ইজরায়েলে কাজ করতে গিয়েছেন বলে খবর। নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে অনেকেই সেখানে কর্মরত। সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হতেই ক্রমে বেড়েছে দুশ্চিন্তা।

    জানা গিয়েছে, নিরাপদ জায়গায় বাংলার ওই যুবকরা রয়েছেন। জানা গিয়েছে, তাঁদের মোবাইলে মাঝেমধ্যেই সতর্কবার্তা আসছে। সেই সতর্কবার্তার মানে মিসাইন হানার সম্ভাবনা। ফলে কাছাকাছি থাকা বাঙ্কারে গিয়ে লুকোতে হচ্ছে সকলকে। গত বেশ কয়েক দিন ধরে এই রোজনামচাই চলছে। ইরানের মিসাইল হানা চলছে ইজরায়েলের বিভিন্ন জায়গায়। এখনও খাবার, পানীয় জলের তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। আগামী দিনে কী পরিস্থিতি হবে? তাই নিয়েই ক্রমে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। টেলিভিশনের দৌলতে পরিবারের সদস্যরা যুদ্ধের খবর যতই দেখছেন, ততই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। ওই শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা চাইছেন, খুব শীঘ্রই এই যুদ্ধ বন্ধ হোক।

    বেতাইয়ের বাসিন্দা গোষ্টচরণ বিশ্বাস জানান, তাঁর দুই ছেলে সঞ্জীব ও সুজিত। দু’জনেই ইজরায়েলে কর্মরত। ছেলেরা ফোন করে জানিয়েছে, যখন তখন মিসাইল হামলা চলছে। মিসাইল হামলার ঠিক ১০ মিনিট আগে সকলের মোবাইলে এলার্ম বাজছে। তখনই অত্যাধুনিক বাঙ্কারে ঢুকতে হচ্ছে। গোষ্টচরণ আরও বলেন, “ছেলেরা ফোন করে জানিয়েছে কয়েক দিন তাঁরা বাঙ্কারের মধ্যেই আছে। খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, সকলে যেন সুস্থভাবে বাড়ি ফিরতে পারে।” তিন মাস আগে ইজরায়েলে গিয়েছেন বেতাই লালবাজারের সদানন্দ হালদার। তাঁর মা আদুরি হালদার ঋণ নিয়ে ছেলেকে ইজরাইলে পাঠিয়েছিলেন। দুশ্চিন্তায় থাকা ওই প্রৌঢ় বারেবারেই ছেলেকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে খোঁজখবর নিচ্ছেন। বেতাইয়ের বিথীকা ভক্তের স্বামী দেবরাজ ইজরাইলে আছেন। চরম দুশ্চিন্তায় থাকা বিথীকা চাইছেন, দ্রুত ফিরে আসুক স্বামী।
  • Link to this news (প্রতিদিন)