• আর্থিক দুর্নীতি, সমবায় সমিতির ম্যানেজার ধৃত
    বর্তমান | ২৩ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: রক্ষকই ভক্ষক! ক্ষমতার অপব্যবহার করে রায়গঞ্জ মহিলা কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে কোটি টাকার কেলেঙ্কারি। আর এই অভিযোগে ধৃত, ওই কো-অপারেটিভ সোসাইটির ম্যানেজার লাবণী দে গুপ্তা। অভিযুক্ত রায়গঞ্জ শহরের পশ্চিম বীরনগর এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘ তদন্তপ্রক্রিয়ার পর রবিবার জেলার এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ তাঁকে পাকড়াও করে জেলা আদালতে হাজির করে বলে জানা গিয়েছে। 

    পুলিসের বক্তব্য, অভিযুক্ত মহিলা এক্তিয়ার বহির্ভূতভাবে মোটা অঙ্কের টাকা ঋণ পাইয়ে দিয়েছেন কয়েকজনকে। রায়গঞ্জের পুলিস সুপার সানা আখতারের বক্তব্য, রায়গঞ্জ মহিলা কো-অপারেটিভ সোসাইটির আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে অভিযোগ আগেই উঠেছিল। যার ভিত্তিতে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করে চলছিল আর্থিক কেলেঙ্কারির অন্তর্বতী তদন্ত। ওই তদন্তে অভিযুক্ত মহিলার প্রত্যক্ষ যোগসূত্র মেলে। এরপরই তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। আদালতের কাছে তাঁরা অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানায়। তাতে সাড়া দিয়ে তদন্তের স্বার্থে আদালত অভিযুক্তকে দু’দিনের জন্য পুলিস হেফাজত মঞ্জুর করেছে। 

    মহিলাদের স্বনির্ভরতার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৩ সালে পথ চলা শুরু হয় রায়গঞ্জ মহিলা কো-অপারেটিভ সোসাইটির। সবকিছু ঠিকঠাক চললেও ২০২১ সালে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অনেক উপভোক্তা সোসাইটিতে টাকা রেখেও টাকা পাচ্ছিলেন না। শেষপর্যন্ত রায়গঞ্জ থানায় এনিয়ে দায়ের হয় অভিযোগ। এই আর্থিক দুর্নীতির আঁচ পেয়ে প্রশাসন ও পুলিসের প্রতিনিধিদের নিয়ে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট গঠিত হয়। কো-অপারেটিভ সোসাইটিতে একটি অন্তর্বর্তী অডিট করানো হয়। তখনই আর্থিক গরমিল ধরা পড়ে। জানা যায়, আর কেউ নয়, এক্তিয়ার বহির্ভূতভাবে সোসাইটির ম্যানেজার লাবণী দে গুপ্তা কয়েকজনকে ঋণ পাইয়ে দিয়েছেন। তাতেই আর্থিক গরমিল হয়েছে। শেষপর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করে জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। 

    পুলিস সূত্রে খবর, লাবণী কয়েকজনকে মোটা টাকা ঋণ পাইয়ে দেন সোসাইটি থেকে। তার মধ্যে একজনকে সর্বোচ্চ ৪৫ লক্ষ টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়া হয় সোসাইটি থেকে। এরপর থেকেই আর্থিক গরমিল শুরু। 

    শেষপর্যন্ত ওই সোসাইটির অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার সোসাইটির আর্থিক লেনদেনের অডিটের ব্যবস্থা করেন। তাতেই আর্থিক দুর্নীতির আঁচ মেলে। কালবিলম্ব না করে সেই সময় পুলিসের কাছে অভিযোগ হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করে জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। পাশাপাশি, রায়গঞ্জের মহকুমা শাসকের প্রতিনিধি সহ কয়েকটি সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয় সিট। সিটের তদন্ত পর্ব মিটতেই শনিবার রাতে ওই মহিলাকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে ডিইবি। সমবায়ের ম্যানেজার গ্রেপ্তার হতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে রায়গঞ্জে।
  • Link to this news (বর্তমান)