ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য বিপর্যস্ত, দিনে ক্ষতি ২ কোটি, চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি কম
বর্তমান | ২৪ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, মেখলিগঞ্জ: চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য কার্যত বিপর্যস্ত। আমদানি বাণিজ্য প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। কমেছে রপ্তানিও। শুল্ক দপ্তর ও ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০টি ট্রাক বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য নিয়ে প্রবেশ করে। কিন্তু গত সাতদিনে মাত্র ১৬টি ট্রাক পণ্য নিয়ে এসেছে। এতে বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় দু’কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে। এই ক্ষতির পরিমাণ মাসে দাঁড়াতে পারে ৬০ কোটির বেশি। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে মশারি নেট, ফিশিং নেট, কটন ওয়েস্ট, কাচ ইত্যাদি পণ্যের আমদানি প্রায় বন্ধের মুখে। ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের তরফে সম্প্রতি জারি এক বিজ্ঞপ্তিতে রেডিমেড পোশাক, ফল, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক সামগ্রীসহ বেশকিছু পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের কোনও স্থলবন্দর দিয়ে এসব পণ্য ভারতে প্রবেশ করতে পারবে না। শুধু কলকাতা ও মুম্বইয়ের বন্দরের মাধ্যমে এই পণ্য আমদানির অনুমতি রয়েছে। রপ্তানি ক্ষেত্রেও ধস নেমেছে।
সাধারণত প্রতিদিন গড়ে দু’শোটি ট্রাক ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য পাঠায়। কিন্তু গত সাতদিনে তা কমে গিয়েছে। এই ক’দিনে সর্বমোট ৬২৮টি ট্রাক পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে গিয়েছে। বর্তমানে মূলত বোল্ডারই রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশে।
বাণিজ্য কমে যাওয়ায় সীমান্ত এলাকায় শ্রমজীবীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। ট্রাক লোড-আনলোডের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের কাজ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
মেখলিগঞ্জ ব্লকের আইএনটিইউসি সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, আমদানি চললে শ্রমিকদের কাজ থাকে। এখন তাঁদের আয় মার খাচ্ছে। বৈদেশিক বাণিজ্যের এই সঙ্কট নিয়ে চ্যাংরাবান্ধা এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোজ কানু ও সম্পাদক উত্তম সরকারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, সমস্যাটি সাময়িক এবং পরিস্থিতি শীঘ্রই স্বাভাবিক হবে বলে তাঁদের আশা। শুল্ক দপ্তরের তরফ থেকেও জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা অনুযায়ীই সমস্ত কার্যক্রম চলছে এবং নতুন নির্দেশ পেলেই তার ভিত্তিতে বাণিজ্য পুনরায় গতি পাবে।