• দিব্যাঙ্গ! নিয়মের শিথিলতায় মিলছে লার্নার, দুর্ঘটনা বাড়ছে পথে, সমস্যায় পরিবহণ দপ্তর
    প্রতিদিন | ২৪ জুন ২০২৫
  • নব্যেন্দু হাজরা: কারও একটা পা নেই। কারও হাত। চিকিৎসকের দেওয়া শংসাপত্রে এঁরা বিশেষভাবে সক্ষম। কিন্তু তাঁরা প্রত্যেকেই গাড়ি চালানোর জন‌্য লার্নার পেয়েছেন। সেই লার্নার দিয়ে গাড়ি হয়তো রাস্তাতেও বের করেছেন। কিন্তু স্থায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সের পরীক্ষা দিতে এসেই বিপত্তি। আরটিও-রা দেখছেন, যাঁরা লাইসেন্সের জন‌্য আবেদন করেছেন, তাঁদের  কেউ ৭০ শতাংশ কেউ বা ৭৫ শতাংশ প্রতিবন্ধী। তাহলে গাড়ি ছোটাবেন কী করে! যদিও বা গাড়ি চালানো কোনওমতে শেখেন, কিন্তু যাঁর একটা হাত বা একটা পা নেই, তিনি সাধারণ চারচাকা গাড়ি চালাতে গেলে তো দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়বে। স্বাভাবিকভাবেই তাই তাঁদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া আটকে দিচ্ছে পরিবহণ দপ্তর। তৈরি হচ্ছে জটিলতা। দপ্তরের কর্তাদের কথায়, বিশেষভাবে সক্ষম ব‌্যক্তিদের জন্য স্পেশাল ক‌্যাটেগরির গাড়ি থাকে, তার লাইসেন্সও আলাদা। সাধারণ লাইসেন্সও তাদের জন‌্য নয়।

    কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী, লার্নার লাইসেন্স পেতে এখন আরটিও অফিসে না গেলেও চলে। অনলাইনে আবেদন এবং অনলাইনেই মৌখিক পরীক্ষা হয়। এক্ষেত্রে আধার এবং আধারের ছবি যাচাই করা হয়। ফলে ওই ব‌্যক্তি কতটা গাড়ি চালাতে সক্ষম তাঁর হাত-পা আছে কি না, চোখের দৃষ্টিশক্তিই বা কেমন, তা দেখা সম্ভব হয় না। যেমন দিনকয়েক আগেই বীরভুমের রামপুরহাটের বাসিন্দা মেহেবুব আলম লার্নার থেকে স্থায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন‌্য আরটিও অফিসে আসেন। তখন দেখা যায়, তাঁর ডান পায়ের হাঁটু সমস‌্যা। পোস্ট পোলিও প‌্যারালিসিস। হাঁটতে পারেন না ঠিক করে। কিন্তু ওই নিয়মের শিথিলতার কারণে লার্নার পেয়ে গিয়েছেন। তা দেখিয়ে স্থায়ী লাইসেন্স নিতে এসেছিলেন। তবে তা আটকে যায়। একইরকমভাবে উত্তর দিনাজপুরের হাসুয়া ইটাহারের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ বর্মন। তাঁরাও একটা হাত প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু সেই একই নিয়মের শিথিলতার কারণে তিনিও লার্নার পেয়ে গিয়েছেন। পরিবহন দপ্তরের কর্তাদের কথায়, কেন্দ্রের নিয়মে এখন আর লার্নার পেতে আরটিও-তে আসতে হয় না। শুধু আধার যাচাই হয়। আর তা ঠিক থাকলে অনলাইনে পরীক্ষা দিতে হয়। তা হলেই মিলে যায় লার্নার। বিভিন্ন মোটর ট্রেনিং স্কুলও এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে  গাড়ি চালানোর অনুপযুক্ত লোকের হাতেও লার্নার পৌঁছে দিচ্ছে। যার জেরে বাড়ছে, দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। তাই দুর্ঘটনা রুখতেই এবার এভাবে যে কারও হাতে লাইসেন্স পৌঁছনো রুখতে জোর দেওয়া হচ্ছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)