পশ্চিমবঙ্গে ২০২৪-২৫-এ সব থেকে বেশি সংখ্যক যৌন নির্যাতনের শিকার শিশুদের উদ্ধার করা হয়েছে। এই এক বছরে গোটা দেশে ২,৯৭১ জন শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে, যারা বিভিন্ন রকম ভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছিল। এর মধ্যে প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ, বা ১,০০৫ জন শিশুই উদ্ধার হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যৌনপল্লি ও সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে সক্রিয় অসরকারি সংগঠনের সক্রিয়তায় এই উদ্ধারের কাজ সম্ভব হয়েছে।
অতীতে শিশু শ্রমিকদের বিভিন্ন রকম শারীরিক পরিশ্রমের কাজে লাগানো হত। আজ শিশু অধিকারের সঙ্গে যুক্ত দেশের প্রায় ২৫০টি অসরকারি সংগঠনের সম্মিলিত রিপোর্ট জানিয়েছে, ২০২৪-২৫-এ গোটা দেশে ৫৩,৬৫১ জন শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। যাদের বেআইনি ভাবে শিশু শ্রমিক হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছিল। চিন্তার বিষয় হল, এর মধ্যে ৯০ শতাংশ শিশুকেই স্পা, মাসাজ পার্লার, অর্কেস্ট্রায় কাজে লাগানো হচ্ছিল। যেখানে তাদের দিয়ে যৌনকর্মীর কাজ করানো হত, পর্নোগ্রাফিতে কাজে লাগানো হত অথবা অন্যান্য ভাবে যৌন নির্যাতন চালানো হত বলে জানা গিয়েছে। এই ৫৩,৬৫১ জন শিশুর মধ্যে তেলঙ্গানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ১১ হাজার শিশুকে। বিহার থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩,৯৭৪ জন শিশু, রাজস্থান থেকে ৩,৪৮৭ জন।
শিশুদের অধিকারের কাজে সক্রিয় আড়াইশোটি অসরকারি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ‘জাস্ট রাইটস ফর চিলড্রেন’-এর রিপোর্ট বলছে, ২০২৪-২৫-এ গোটা দেশে ১১,৪০৯ জন শিশু হারিয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যে ৮,৭৪৯ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সব থেকে বেশি, ৩,৫০৯ জন শিশুকে উদ্ধার হয়েছে। শিশুদের উদ্ধাদের সঙ্গে যুক্ত পুলিশ, প্রশাসন ও অসরকারি সংগঠনগুলির মধ্যে সক্রিয় সমন্বয়ের ফলেই এত শিশুকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে সংগঠনগুলির মত। ভিক্ষার কাজে লাগানো হয়েছে, এমন ১,৫১৭ জন শিশুকে এক বছরে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৪৮ জন উদ্ধার হয়েছে।
‘জাস্ট রাইটস ফর চিলড্রেন’-এর আহ্বায়ক রবি কান্ত বলেন, এত বিপুল সংখ্যক শিশুকে সব থেকে খারাপ রকমের কাজে লাগানো হচ্ছে। এর থেকে স্পষ্ট, সরকার ও নাগরিক সংগঠনের চেষ্টা সত্ত্বেও শিশু শ্রমে ইতি টানার লক্ষ্য পূরণ হয়নি।