• মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের এক বছর পার, প্রকাশ হল না হকার তালিকা
    আনন্দবাজার | ২৪ জুন ২০২৫
  • হকারদের দৌরাত্ম্য দেখে গত বছরের জুনে প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে নবান্নে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘‘নতুন করে হকার বসালে গ্রেফতার হতে হবে। রাস্তা দখলের জন্য দায়ী রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশেরাই।’’ এর পরেই হকার নিয়ন্ত্রণে অভিযানে নামে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কলকাতায় হকারদের সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছিল। অভিযোগ, এক বছর পার হলেও হকারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা এখনও প্রকাশ হল না। সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী হকারদের তালিকা পুরসভার ওয়েবসাইটে প্রকাশ হওয়ার কথা। তা হয়নি। ভেন্ডিং সার্টিফিকেটও হাতে পাননি হকারেরা।

    পুরসভা সূত্রের খবর, শহর কলকাতায় প্রায় ৫৪ হাজার বৈধ হকার রয়েছেন। গত বছর সমীক্ষা চালিয়ে ৮,৭০০ জন হকারকে চিহ্নিত করা হয়, যাঁরা সমস্ত বিধি মেনে ব্যবসা করছেন। পুরসভার তরফে ওই তালিকা পুর সচিবালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন তা পুরসভার ওয়েবসাইটে নথিভুক্ত করার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি দফতরে গিয়েছে।

    প্রশ্ন উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও হকারদের তালিকা প্রকাশের কাজ নিয়ে পুরসভার এত শিথিলতা কেন? শহরের বৈধ ৫৪ হাজার হকারের মধ্যে মাত্র ৮,৭০০ জনের তালিকা পাওয়া গেলেও কেনই বা তা পুরসভার ওয়েবসাইটে তোলা হল না? এ নিয়ে হকারেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। হকার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক শক্তিমান ঘোষের অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরে এক বছর পার হলেও এক জন হকারকেও শংসাপত্র প্রদান করা হল না। ৮৭০০ জন বৈধ হকার খুঁজে পাওয়া গেলেও শংসাপত্র না পাওয়ায় তাঁরা বিপন্নতায় ভুগছেন।’’ শক্তিমানের প্রশ্ন, ‘‘এক বছর পরেও ৮৭০০ জনের ভেন্ডিং শংসাপত্র দেওয়া গেল না? তা হলে ৫৪ হাজার হকার কবে শংসাপত্র পাবেন?’’

    প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের টাকায় শহরের তিন জায়গায় ‘ফুড স্ট্রিট’ নির্মাণ করার কথা। দেশের অন্যান্য রাজ্যে ফুড স্ট্রিট তৈরি শেষ হলেও পিছিয়ে কলকাতা। শক্তিমান বলেন, ‘‘ব্যবসা চালাতে ভেন্ডিং সার্টিফিকেট গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তা হকারদের হাতে না থাকায় ফুড স্ট্রিটে দোকান পেতে তাঁদের সমস্যা হচ্ছে।’’

    এক বছর পার হলেও হকারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা কেন পুর ওয়েবসাইটে প্রকাশ হল না? কেনই বা তাঁরা এখনও ভেন্ডিং সার্টিফিকেট হাতে পেলেন না? উত্তরে মেয়র ফিরহাদ হাকিম সোমবার বলেন, ‘‘সকালে সমীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে এক জন বসে আছেন। দুপুরে সেই জায়গায় বসছেন অন্য জন। ফলে সমস্যা হচ্ছে। আমরা শীঘ্রই হকারদের প্রাথমিক তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করব। ইতিমধ্যে বেশ কিছু হকারকে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)