• বার্ষিক প্যাকেজ ১৪৫০০০০০! বেতনের অঙ্কে দেশে বড় চাকরিতে টেক্কা যাদবপুরের উপায়নের
    আনন্দবাজার | ২৪ জুন ২০২৫
  • আইআইটি-র পরীক্ষায় যা র‌্যাঙ্ক এসেছিল, তাতে পছন্দমাফিক প্রথম সারির কোনও আইআইটি-তে পড়ার সুযোগ হত না উপায়ন দে-র। কিন্তু রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ৯৮তম স্থান পাওয়ার পরে পিছনে তাকাননি তিনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যাওয়ার সিদ্ধান্তই সেরা সিদ্ধান্ত বলে এখন বিলক্ষণ বুঝছেন। কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র উপায়ন এ বার বেঙ্গালুরুতে ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকার বার্ষিক প্যাকেজে চাকরিতে ঢুকেছেন। সাম্প্রতিক অতীতে মেটা বা গুগ্‌লের চাকরিতে যাদবপুরের ছাত্রদের ১ কোটি ৮০ লক্ষের বেশি টাকার প্যাকেজে ঢোকার নমুনা আছে। কিন্তু, তা বিদেশে। ইন্টার্নশিপের পরে ‘রুব্রিক ইন্ডিয়া’ সংস্থায় চাকরি পেয়েছেন উপায়ন।

    রাজ্যে জয়েন্টের ফল নিয়ে অনিশ্চয়তার আবহে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার গুরুত্ব নতুন করে বোঝাল উপায়নের সাফল্য। কৃতী এই ছাত্রের বাবা, জিএসআই-এর বিজ্ঞানী মণীশ দে-ই বলছেন, ‘‘যাদবপুরে চার বছরে ১০-১১ হাজারের বেশি টাকা খরচ হয়নি। সেখানে আইআইটি-র এক-এক সিমেস্টারে লক্ষাধিক টাকা খরচ। অথচ, ছেলে সাফল্যে অনেককেই ছাপিয়ে গেল।’’ সম্প্রতি যাদবপুরের নাম বাদ দিয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ‘ইনস্টিটিউট অব এমিনেন্স’ করেছে কেন্দ্র। যাদবপুরের শিক্ষকদের সেই বঞ্চনায় ক্ষোভ রয়েছে। পাশাপাশি, রাজ্য জয়েন্টের ফল না-বেরোনোয় শিক্ষার্থীরা অনেকেই ভিন্ রাজ্যে বেশি খরচে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও শিক্ষাজগৎ উদ্বিগ্ন।

    বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে উপায়ন বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে যাঁরা ইন্টার্নশিপ করছিলেন, বেশির ভাগই আইআইটি-র।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যাদবপুরে ক্লাস হয় না, ধারণাটি ভুল। কেউ রাজনৈতিক ভাবে সচেতন মানেই সেখানে পড়াশোনার পরিবেশ নেই, এই ধারণাও ঠিক নয়।’’ উপায়নের শিক্ষকদের মধ্যে প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান নন্দিনী মুখোপাধ্যায় বা বিভাগীয় অধ্যাপক সঞ্জয়কুমার সাহা উপায়নকে কাছ থেকে দেখেছেন। সঞ্জয়ের কথায়, ‘‘আজকাল ক্লাস করার প্রবণতা কমেছে। কিন্তু উপায়ন ক্লাসে নেই, এমন খুব কমই হয়েছে। ঘন ঘন প্রশ্ন করত। মেধাবী হয়েও পরিশ্রম করত। এই সাফল্যে তারই ছাপ।’’ যাদবপুরের সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত বলেন, ‘‘এই সাফল্য যাদবপুরের শিক্ষার্থী, শিক্ষক সকলের।’’ সূত্রের খবর, এ বার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে প্লেসমেন্টের সাফল্য বেড়ে ৯৫ শতাংশের কাছাকাছি হয়েছে। কিন্তু গত বছর ‘নাক’ মূল্যায়নেও যাদবপুর প্লেসমেন্ট বা কর্মসংস্থান সংক্রান্ত তথ্য বেশি দিতে না পারায় ভুগতে হয়েছে। সহ-উপাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি খেয়াল রাখা হচ্ছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)