ব্যস্ত সময়ে যানজট ঠেলে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে অনেকেই বাইক-ট্যাক্সিকে বেছে নেন। যাত্রী-সুরক্ষার বিভিন্ন শর্ত পূরণ করে এই বাইক-ট্যাক্সির চলাচলকে মান্যতা দিতে পরিবহণ দফতর সম্প্রতি সেগুলিতে হলুদ নম্বর প্লেট বসানোর ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু, শহরের অন্যত্র আসা-যাওয়ায় কোনও বিধিনিষেধ না থাকলেও বাইক-ট্যাক্সি নিয়ে বিমানবন্দরে যেতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অভিযোগ, বিমানবন্দরে যেতে সরকারি যাত্রী সাথী অ্যাপ ছাড়াও বহুল প্রচলিত বেসরকারি সংস্থার অ্যাপ থেকে বাইক-ট্যাক্সি ভাড়া করা যায় না। অন্য কিছু বেসরকারি সংস্থার অ্যাপ থেকে বাইক ভাড়ার সুবিধা মিললেও সেই অ্যাপ-বাইক নিয়ে বিমানবন্দর এলাকায় ঢুকলেই পুলিশি জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে চালকদের। অভিযোগ, কার্যত তাঁদের গ্রেফতার করে নির্দিষ্ট মেমোতে সই করতে বলা হচ্ছে। জরিমানার টাকা মিটিয়ে তবেই তাঁদের জামিন নিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ বাইক-ট্যাক্সি চালক সংগঠনের।
কলকাতা বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের বড় অংশ মূলত অন্তর্দেশীয় উড়ানের যাত্রী। দৈনিক প্রায় ৫০-৫৫ হাজার যাত্রীর মধ্যে অনেকেই একা সফর করেন। উড়ান ধরা ছাড়াও শহরে ফিরে অনেকেই কম খরচের অ্যাপ-বাইক ভাড়া করতে চান। কিন্তু কলকাতা বিমানবন্দরে ওই সুবিধা মিলছে না বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশের দাবি, বিমানবন্দরের মূল এলাকায় অ্যাপ-বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই তাদের কিছু করার নেই।
সরকারি যাত্রী সাথী এবং অন্য একটি বেসরকারি সংস্থার অ্যাপ সূত্রের খবর, বিমানবন্দরগামী বা বিমানবন্দর থেকে শহরের নানা গন্তব্যে যেতে চাওয়া যাত্রীদের ওই সব অ্যাপ থেকে বাইক-ট্যাক্সি ভাড়া করার সুযোগ দেওয়া হয় না। এ ক্ষেত্রে তাঁদের ক্যাব ভাড়া করারই সুযোগ দেওয়া হয়। অন্য কয়েকটি অ্যাপে এখনও এই বিধিনিষেধ চালু না হলেও বিমানবন্দরে যাত্রী নিয়ে পৌঁছলেই সেই সব চালককেও পুলিশি জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে খবর।
এ নিয়ে কলকাতা সাবার্বান বাইক-ট্যাক্সি অপারেটর্স ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটকে জানানো হয়েছে। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দেবু সাউ এবং সভাপতি শান্তিদেব ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারের থেকে পরিষেবা নিয়ে পাঁচ জেলায় বাইক-ট্যাক্সি চালানোর বৈধতা থাকা সত্ত্বেও হলুদ নম্বর প্লেটযুক্ত বাইক চলতে দেওয়া হচ্ছে না। এই নিয়ম সরকারি নীতির বিরোধী।’’ বিষয়টি নিয়ে পরিবহণ দফতরের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও ভাবছেন তাঁরা। এমন বিধিনিষেধ জারি হলে ভবিষ্যতে প্রান্তিক রেল স্টেশনগুলি নিয়েও সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছে ওই সংগঠন। সেখানেও নানা যুক্তি দেখিয়ে অ্যাপ-বাইক নিষিদ্ধ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ নিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে চাননি। তাঁদের দাবি, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় ছাড়াও বিমানবন্দর চত্বরযানজট-মুক্ত রাখতে এই সিদ্ধান্ত। পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, এ নিয়ে নির্দিষ্ট সমস্যার কথা তাঁদের জানা নেই। অভিযোগ পেলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।