তিন বছরের মধ্যে শেষ হবে ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’।মঙ্গলবার বিধানসভা থেকে স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি জমিজট মেটানোর উপায়ও এ দিন বাতলে দেন তিনি।
গত লোকসভা নির্বাচনে দেবকে প্রার্থী করার আগে ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’ নিয়ে বড় ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারই এই প্রকল্পের দায়িত্ব নেবে, জানিয়েছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। এর পরে রাজ্য বাজেটের এক তৃতীয়াংশ (৫০০ কোটি) বরাদ্দও করা হয় এই প্রকল্পের জন্য। এই প্ল্যানে ১৩০ কিলোমিটার নদীর ড্রেজ়িং, বাঁধ নির্মাণ, ব্রিজ তৈরি, খাল কাটা, খালের সংস্কার, কৃত্রিম নদী তৈরি, জমি অধিগ্রহণের মতো বেশ কিছু কাজ করার কথা রয়েছে। কিন্তু জমি জটে চন্দ্রেশ্বর খাল চওড়া করার কাজ আটকে যায়। ফের একবার থমকে যাবে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান? এই আশঙ্কা তৈরি হচ্ছিল।
এ দিন বিধানসভায় মমতা বলেন, ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে জমি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে রুট ঘুরিয়ে দিন। কারও বসত যেন নষ্ট না হয়।’ এর পরে তিনি আরও বলেন, ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান তিন বছরে শেষ হবে। এ জন্য ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে ফের জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল ঘাটালের একাধিক এলাকা। এর পরেই ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষের শিকার হয়েছিলেন স্থানীয় সাংসদ দেব। সরব হন বিরোধীরাও। যদিও পাল্টা সরব হয়েছিলেন এই তারকা সাংসদও। কেন্দ্রের কাছে গত ১০ বছর ধরে আবেদন করলেও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে ইতিবাচক কোনও উত্তর মেলেনি বলে দাবি করেছিলেন তিনি।
রাজ্যের সহায়তার কথা উল্লেখ করে তিনি জানিয়েছিলেন, এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের সময়সীমা কমপক্ষে ৪-৫ বছর। যদিও এ দিন সেই সময়সীমা আরও কমিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কেন্দ্র রাজ্য টানাপড়েন সেই বাম জমানা থেকে। ১৯৮৩ সালে প্রকল্পের শিলান্যাস করেন রাজ্যের তৎকালীন সেচমন্ত্রী প্রভাস রায়। কিন্তু তার পরে আর কাজ এগোয়নি। ১৯৯৩ সালে ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি’ গঠন করেন এলাকার বাসিন্দারা। তবে তাতেও কাজের কাজ হয়নি। ২০০৯ সালে প্রকল্প পুনর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য। এর পর রাজ্যে পালাবদল হয়। গত ১১ বছর ধরে এই প্রকল্প নিয়ে একাধিকবার কেন্দ্রের দরজায় কড়া নেওয়া কোনও আর্থিক সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ রাজ্যের শাসক দলের।
এর পর ঘাটালের জলছবি বদলানোর জন্য উদ্যোগ নেয় খোদ রাজ্য সরকার। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের মোট ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয় ১৫০০ কোটি টাকা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে কাজ শুরু হয়।