ইডির মামলায় জামিন পেলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৪ জুন ২০২৫
ইডির মামলায় জামিন পেলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তাঁর জামিন মঞ্জুর করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। তবে এখনই জেল মুক্তি হচ্ছে না কল্যাণময়ের। সিবিআই মামলায় তাঁকে আপাতত জেল হেফাজতেই থাকতে হবে।
এর আগে স্কুলে গ্রুপ সি কর্মী নিয়োগের মামলাটিতে জামিন পেয়েছিলেন কল্যাণময়। কিন্তু সেবারও তাঁর জেলমুক্তি হয়নি। কারণ সকালে জামিন পেলেও, সেই রাতেই অন্য এক মামলায় আবার গ্রেপ্তার হন কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। নবম দশম শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সিবিআই গ্রেপ্তার দেখায় কল্যাণময়কে। আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে তদন্তকারী সংস্থা কল্যাণময়কে আবার ‘গ্রেপ্তার’ হিসাবে দেখায়। সেই গ্রেপ্তারির আবেদন মঞ্জুরও হয়।
অভিযোগ, কল্যাণময় তাঁর প্রশাসনিক ক্ষমতা ও সরকারি পদ ব্যবহার করে নিয়োগের ক্ষেত্রে একাধিক দুর্নীতিমূলক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই মুহূর্তে অবশ্য কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় আর কোনও সরকারি পদে নেই। অবসরপ্রাপ্ত জীবনে রয়েছেন তিনি। হাইকোর্টে সেই বিষয়টি তুলে ধরেন কল্যাণময়ের আইনজীবী। আদালত জানায়, কল্যাণময় একজন সমাজে পরিচিত ব্যক্তি এবং তিনি তদন্তে সহযোগিতাও করছেন।
তবে কল্যাণময়ের জামিনের বিরোধিতা করেছিল ইডি। কেন কল্যাণময়কে জামিন দেওয়া হবে না, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে জানতে চেয়েছিল আদালত। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর মঙ্গলবার ইডির মামলায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের জামিন মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট। তবে একাধিক মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি দেখানো হয়েছে বলেই এখনও পর্যন্ত তাঁর মুক্তির সম্ভাবনা নেই। ফলে আপাতত মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতিকে জেলে থাকতে হচ্ছে।
কল্যাণময়ের আমলে স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০১২ সালে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অ্যাডহক কমিটির প্রশাসক হন তিনি। সব মিলিয়ে চার বছর, অর্থাৎ ২০১৬ পর্যন্ত সেই পদে ছিলেন তিনি। সেই বছরেই তাঁকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি করা হয়। ২০২২ সালের ২২ জুন তাঁর মেয়াদ শেষ হয় ওই পদে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদ ‘বেআইনি’ ভাবে আঁকড়ে রেখেছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে।
তিনি পর্ষদের সভাপতি থাকাকালীন ওই পদের মেয়াদ দু’বার বৃদ্ধি করা হয়। প্রথমে ওই পদে থাকার বয়ঃসীমা ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ করেছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। তার পর ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৮ করা হয়। কল্যাণময় অবশ্য ৬৮ পেরিয়েও আরও ১৬ মাস সবেতন পর্ষদের দায়িত্ব সামলেছেন। কেন তিনি অতিরিক্ত বেতন নিয়ে চাকরি করছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এসএসসির দুর্নীতি তদন্তে নেমে ইডির হাতে পরে গ্রেপ্তার হন কল্যাণময়।