দিন-দিন বেঁটে হচ্ছে আলিপুর চিড়িয়াখানার জিরাফ! কর্তৃপক্ষের ভরসা পাটনা দাওয়াই
প্রতিদিন | ২৪ জুন ২০২৫
নিরুফা খাতুন: হাতি, বাঘ, সিংহের মতো তার অত রাশভারী জাঁক নেই। তবে উচ্চতম প্রাণী হিসেবে নাক উঁচু ভাব রয়েছে বিলক্ষণ। কিন্তু আলিপুর চিড়িয়াখানায় জিরাফদের গর্ব সেই উচ্চতাই এখন সংকটে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে প্রজননের কারণে জিনগত বিচ্যুতিতে তাদের উচ্চতা কমতির দিকে! সংকট নিরসনে তাই পাটনা থেকে ভিন বংশের জিরাফ এনে প্রজনন করানো হবে আলিপুর চিড়িয়াখানায়।
আলিপুরে বর্তমানে রয়েছে ন’টি জিরাফ। তিনটে পুরুষ ও ছ’টি স্ত্রী। তাদের সংসার ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু নতুন প্রজন্মের উচ্চতা কমছে। জিনগত সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। জিরাফের গড় উচ্চতা ১৪ থেকে ২০ ফুট। সেখানে আলিপুরে নতুন প্রজন্মদের উচ্চতা ১০ থেকে ১২ ফুট। পরিবারের মধ্যে প্রজনন বন্ধ না হলে আলিপুরের জিরাফ ক্রমশ বেঁটে হয়ে যাবে বলে কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা।
চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, আলিপুরে বছরের পর বছর ধরে পরিবারের সদস্যদের মধে্যই জিরাফের প্রজনন চলছে। ফলে জিনগত সমস্যার সঙ্গে তাদের উচ্চতাও একটু একটু করে কমছে। জিরাফের উচ্চতা ধরে রাখতে ও জিন-সমস্যা এড়াতে অনেকদিন ধরে ভিনরাজ্যে জিরাফের সন্ধান চলছিল।
শেষমেশ মুশকিল আসান হয়েছে পাটনা চিড়িয়াখানা। বিনিময় প্রথায় আলিপুর পাটনাকে স্ত্রী জিরাফ দেবে, পাটনাও স্ত্রী জিরাফ পাঠাবে। এ ব্যাপারে দুই তরফে কথাবার্তা চূড়ান্ত। সম্প্রতি বিহার রাজ্য জু অথরিটির প্রতিনিধিরা আলিপুর চিড়িয়াখানা ঘুরে গিয়েছেন। জিরাফ বিনিময়ের জন্য কেন্দ্রীয় জু অথরিটির ছাড়পত্রের আবেদনও করা সারা। তাদের সবুজ সংকেত এলেই পটনা থেকে জিরাফ আসবে।
১৯৮৬ সালে তদানীন্তন পশ্চিম জার্মানি থেকে দু’জোড়া জিরাফ আনা হয়েছিল আলিপুরে। এখনকার তৃণা, মুনিয়া, লক্ষ্মী, বিথির, বুবলি, মঙ্গলরা তাদেরই বংশধর। এদের অনেক ভাই-বোন ভিন রাজ্যেও রয়েছে।
দর্শক আকর্ষণের ময়দানে বাঘ, সিংহ, শিম্পাজিদের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দেয় জিরাফেরা। বিনিময়ের ক্ষেত্রেও জিরাফের যথেষ্ট কদর। যেমন ওড়িশার নন্দনকানন থেকে গত বছর আলিপুরে বাঘ-সহ একাধিক পশু আনা হয়। পরিবর্তে এখান থেকে তাদের দেওয়া হয়েছিল দুটো জিরাফ।