চুঁচুড়া শহরের চারমাথার মোড়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ‘এডওয়ার্ডিয়ান ক্লক টাওয়ার’। স্থানীয়দের কাছে এলাকাটি ‘ঘড়ির মোড়’ নামে পরিচিত। কিন্তু সেই ঘড়ির মোড়ের ঘড়িতে এখন আর আলো জ্বলে না। পুর প্রধানের কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। অর্থাৎ ঘড়ি চলেনি। যার জেরে ইতিহাস মাথায় নিয়ে অন্ধকারেই দাঁড়িয়ে রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন ঘড়িটি।
জানা গিয়েছে, ব্রিটিশরা ভারত দখল করার পরে ইংল্যান্ডের রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডের স্মৃতিতে ঘড়িটি স্থাপন করা হয় চুঁচুড়ায়। ইংল্যান্ড থেকে আনা হয়েছিল এই ঘড়িটি। হুগলির এই ঘড়িটির চারদিকে রয়েছে চারটি বাতি এবং উপরে রয়েছে একটি ধাতব ঘণ্টা। এ ছাড়া স্তম্ভটির ঠিক নীচে রয়েছে রাজা সপ্তম এডওয়ার্ডের একটি মূর্তি। ঐতিহ্যবাহী এই স্মৃতি ফলক আজ হেরিটেজের মর্যাদা পেয়েছে। কিন্তু তার পরেও রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। স্তম্ভ ঘড়িটির চারিদিকে যে চারটি বাতি রয়েছে সেগুলি প্রায় দু’বছর ধরেই অচল।
রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড ছিলেন ব্রিটেনের রানি ভিক্টোরিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনি রানির মৃত্যুর পরে ১৯০১ খৃষ্টাব্দের ৯ অগস্ট ব্রিটেন ও ভারতবর্ষের শাসনকর্তা হিসেবে নির্বাচিত হন। যদিও মাত্র ৯ বছর রাজত্ব করার পরে ১৯১০ সালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে তাঁর জীবনাবসান ঘটে। তাঁর স্মৃতিতেই ১৯১৪ সালে এই সুসজ্জিত স্তম্ভ ঘড়িটি চুঁচুড়া চার্চের সামনের চার মাথার মোড়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে চুঁচুড়াবাসীর অভিযোগ, ‘বারবার PWD ইলেকট্রিক্যাল-কে জানানোর পরেও কোনও রকম গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন আমরা আশাহত। এমন এক স্মৃতিফলক এখানে থাকার পরেও তার পর্যবেক্ষণ সঠিক ভাবে করা হয় না।’ হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার প্রধান অমিত রায় বলেন, ‘ঘড়ির মোরের ঘড়ির ছবি পুরসভার লোগোতেও আছে। আমরা চারবার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কোনও উত্তর নেই।’