দীর্ঘ ১৪ বছরের অপেক্ষার অবসান। গোঘাটে তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার মোট ১৯ জনের সাজা ঘোষণা করল আরামবাগ আদালত। এদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত বলদেব পালের ফাঁসির সাজার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বাকি ১৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। ৭ জনকে এই মামলা থেকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছেন বিচারক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন গোঘাটের বর্তমান বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক, সিপিএম নেতা দেবু চট্টোপাধ্যায় ও ভাস্কর রায়ও রয়েছেন।
গোঘাটের সাওড়া ইউনিয়ন হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর। ওই দিনই ঘটনার সূত্রপাত। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে গন্ডগোল বাধে। প্রকাশ্যে গুলি করে খুন করা হয় তৃণমূল নেতা শেখ নইমুদ্দিনকে। এর পরেই নইমুদ্দিনের স্ত্রী গোঘাট থানায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করেন।
মামলা শুরু হয়। শুনানি হয় ২৬ জনের বিরুদ্ধে। শুরু হয় সওয়াল জবাব। অবশেষে এ দিন আরামবাগ মহকুমা অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সেশন জাজ কিষেন কুমার আগরওয়াল ১৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। এদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত বলদেব পালকে ফাঁসির সাজা ও বাকি ১৮ জনকে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা ঘোষণা করেন তিনি।
সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘এই মামলাটা বিরলের মধ্যে বিরলতম। যে গুলি করেছিল তার ফাঁসির সাজা চেয়েছিলাম বিচারকের কাছে। বিচারক আমার সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। বাকিদের যাবজ্জীবন হয়েছে। সেই সঙ্গে দশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর জেল।’
মৃত তৃণমূল কর্মীর স্ত্রী তাহেরা বেগম বলেন, ‘আদালতের রায়ে আমি খুশি। প্রকাশ্য রাস্তায় আমার স্বামীকে মাথায় গুলি করে মেরেছিল। ১৪ বছর ধরে লড়াই করছি। অবশেষে যা চেয়েছিলাম, তাই হলো।’
তবে এই রায়ে খুশি নন অধিকাংশ অভিযুক্তদের পরিবার। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে তাপস খাঁয়ের। সাজা ঘোষণার পর তাঁর মা বললেন, ‘আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে।’