মহিলার অভিযোগ ছিল, ডাকাতি করতে এসে দুষ্কৃতীরা তাঁর স্বামীকে খুন করে পালিয়ে যায়। তবে তদন্তে জানা যায়, স্বামীকে হত্যার জন্য ‘সুপারি’ দিয়েছিলেন রিনা মাল নামের ওই মহিলা। প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধতে ‘পথের কাঁটা’ স্বামীকে সরানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। সেই খুনের ঘটনার ১৩ বছর পরে, নাবালক ছেলের সাক্ষ্যে, আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলেন রিনা। মঙ্গলবার, রিনা, তার প্রেমিক জিকো পাল-সহ সাত জনকে এই খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন হুগলি জেলা আদালতের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক কৌস্তভ মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার শাস্তি ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছেন আদালতের সরকারি আইনজীবী বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী।
পুলিশ এবং আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের ২৮ মার্চ, হুগলির পোলবা থানার পাটনা গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ মালকে গলা কেটে খুন করা হয়। তখন তাঁর স্ত্রী রিনা মাল জানিয়েছিলেন যে ডাকাতি করতে এসে দুষ্কৃতীরা তাকে এবং ছেলেকে বেঁধে, কৃষ্ণকে খুন করে টাকা এবং গয়না লুট করে নিয়ে যায়। তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মিথ্যা কথা বলেছিলেন রিনা। বয়সে বড় স্বামীর সঙ্গে সুখী ছিলেন না তিনি। তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলাগড়ের যুবক জিকো পালের। এই জিকোর সঙ্গেই ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। তাই জিকোর সঙ্গে পরিকল্পনা করেই স্বামীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন রিনা। এই জন্য ‘সুপারি’ দেওয়া হয় পাঁচ জনকে।
জানা গিয়েছে, ঘটনার দিনে, দুষ্কৃতীরা এলে দরজা খুলে দেন রিনা। তদন্তে নেমে রিনার সঙ্গে জিকোর প্রেম, তার স্বামীকে খুন, সাজানো ডাকাতি সব পরিকল্পনা জানতে পারে তদন্তকারীরা। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় রিনা, জিকো-সহ ৭ জনকে।
বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী জানান, এই মামলায় ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। কৃষ্ণ মালের নাবালক সন্তানের সাক্ষ্যও গ্রহণ করা হয়। তার বয়ানেই জানা যায়, মিথ্যা কথা বলেছিলেন রিনা। আদালতের সরকারি আইনজীবী জানান, তিনি দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছেন।