নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ময়নাগুড়ির মতো শিলিগুড়ির চম্পাসারির এটিএম লুট কাণ্ডের পিছনেও মিলল নুহ গ্যাংয়ের যোগ। তদন্তে নেমে হরিয়ানা ও শিলিগুড়ি থেকে তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করল প্রধাননগর থানা।
মঙ্গলবার শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ খুরশিদ, জাভেদ খান ও মহম্মদ ইসরাইল। তিনজনেরই বাড়ি হরিয়ানার নুহতে। খুরশিদকে হরিয়ানা থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে প্রধাননগর থানার পুলিস। তাকে সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জেরা করে ট্রানজিট রিমান্ডে শিলিগুড়ি নিয়ে আসার পথে তার থেকে পাওয়া মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে বাকি দুই দুষ্কৃতী জাভেদ ও ইসরাইলের ঠিকানা পায় পুলিস। সেই মোতাবেক অসম থেকে পিছু নিয়ে পুলিসের একটি টিম ভক্তিনগর থানার শালুগাড়া থেকে ওই দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের হেফাজত থেকে ৩ লক্ষ ১৯০ টাকা উদ্ধার হয়েছে। তিনজনকে হেফাজতে নিয়ে দলের বাকি সদস্যদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিস।
ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, চম্পাসারির এটিএম লুট কাণ্ডে তিন দুষ্কৃতী গ্রেপ্তার হয়েছে। তিন লক্ষের বেশি টাকা উদ্ধার হয়। ধৃতরা নুহ গ্যাংয়ের সদস্য। বাকিদের খোঁজ চলছে।
গত বুধবার গভীর রাতে চম্পাসারির জ্যোতিনগর কলোনিতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারে ১০ লক্ষের বেশি টাকা লুট হয়। ঘটনার তদন্তের নেমে পুলিস একাধিক রাজ্যে টিম পাঠায়। সেখান থেকেই হরিয়ানার তিনজনের সূত্র পান অফিসাররা। পুলিস প্রাথমিকভাবে জানতে পারে ঘটনার পর বাকিরা পালিয়ে গেলেও দুই সদস্য পার্শ্ববর্তী রাজ্য ও উত্তরবঙ্গে ঘুরছে। আরও কোনও এমন ঘটনা ঘটানোর জন্য তারা তৈরি হচ্ছে। পুলিস হরিয়ানায় গিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করার পরে সেই তথ্য হাতে পায়। এরপরই তারা মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে বাকি দুই দুষ্কৃতীর খোঁজ চালাতে শুরু করে।
পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, অসম বা উত্তরবঙ্গের অন্য কোনও জায়গায় এটিএম লুট করার পরিকল্পনা করেই এগচ্ছিল দলের বাকি সদস্যরা। যদিও তার আগেই পুলিসের হাতে ধরা পড়ে যায় দু’জন। পুলিসের দাবি, এখনও পর্যন্ত দুষ্কৃতী দলের আরও সদস্য উত্তরবঙ্গজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে পারে। এই তথ্যকে সামনে রেখেই একাধিক জায়গায় নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পেরেছেন, ঘটনা ঘটিয়ে সড়ক পথেই বিহার হয়ে হরিয়ানার উদ্দেশ্যে রওনা হয় এরা। মাঝেই কোন এক জায়গায় দলের দুই সদস্য নেমে যায়। এটিএম লুটের ঘটনায় মোট কতজন ছিল, সেবিষয়ে এখনও পর্যন্ত ধৃত তিনজনকে জেরা করে পুলিস স্পষ্ট করে কিছু জানতে পারেনি। প্রধাননগর থানার আইসি বাসুদেব সরকার বলেন, ধৃতদের এদিন শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের হেফাজতে পাওয়া গিয়েছে। যে গাড়ি নিয়ে পালিয়েছিল, সেটির খোঁজ চলছে।