স্কুল পালিয়ে ‘দুষ্টুমি’, দ্বারকেশ্বরে তলিয়ে গেল নবম শ্রেণির তিন ছাত্র! নামানো হল স্পিডবোট
আনন্দবাজার | ২৫ জুন ২০২৫
স্কুল পালিয়ে দ্বারকেশ্বর নদে স্নান করতে নেমেছিল তিন পড়ুয়া। জলের তোড়ে ভেসে গেল তিন জনই। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার ষাঁড়েশ্বর মন্দিরের কাছে দ্বারকেশ্বর নদের সুভাষপল্লী ষাঁড়েশ্বর ঘাটে। তলিয়ে যাওয়া তিন জনই নবম শ্রেণির পড়ুয়া। স্থানীয়েরা চেষ্টা করেও তাদের উদ্ধার করতে পারেননি। পরে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজে নামে। স্পিডবোট নিয়ে তল্লাশি চলে। কিন্তু সন্ধে পর্যন্ত উদ্ধারের কোনও খবর মেলেনি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ৮ থেকে ১০ জন পড়ুয়া স্কুল পালিয়ে দ্বারকেশ্বরের ঘাটে যায়। কয়েক জন নদের পারে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। তাদের মধ্যে অর্কদীপ দাস, সায়ন চট্টোপাধ্যায় এবং পরমেশ্বর মিশ্র নামে তিন পড়ুয়া দ্বারকেশ্বরে স্নান করতে নেমে পড়ে। প্রবল স্রোতের কারণে তিন জনেই তলিয়ে যেতে থাকে। পারে থাকা সহপাঠীদের চিৎকার-চেঁচামেচিতে স্থানীয়েরা ছুটে যান। তাঁদের কয়েক জন তিন নাবালককে উদ্ধার করতে জলে নামেন। কিন্তু তিন ছাত্রই তত ক্ষণে তলিয়ে গিয়েছে।
পরে খবর পেয়ে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী হাজির হয় ঘটনাস্থলে। কিন্তু স্পিডবোট নিয়ে তল্লাশি চালিয়েও তিন ছাত্রের খোঁজ মেলেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তিন পড়ুয়ার পরিবারের সদস্যেরা।
তলিয়ে যাওয়া তিন ছাত্রের সহপাঠী তথা প্রত্যক্ষদর্শী শুভম বন্দ্যোপাধ্যায় বলে, ‘‘জলে তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে আমরা কয়েক জন পারে বসেছিলাম। কিন্তু অর্কদীপ, সায়ন আর পরমেশ্বর স্নান করতে নেমেছিল। সাঁতার কেটে তিন জনই ক্রমশ নদের গভীরে চলে যাচ্ছিল। আমরা চিৎকার করে ওদের নিষেধ করি। কিন্তু কথা শোনেনি ওরা। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর তিন জনই তলিয়ে যেতে থাকে। আমি জলে নেমে তোলার চেষ্টা করেও পারিনি। আমরা স্থানীয় লোকজনদের ডেকে সাহায্য চাই। অনেকে এগিয়ে আসেন। কিন্তু তত ক্ষণে তিন জনই তলিয়ে গিয়েছে।’’ সায়নের বাবা চঞ্চল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে স্কুলে ছুটে গিয়েছিলাম। সেখানে শুনি, ছেলে কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে ষাঁড়েশ্বর মন্দিরের দিকে গিয়েছে। শুনে এখানে (নদের ধারে) এসে দেখি, আমার ছেলে-সহ তিন জন দ্বারকেশ্বরের জলে তলিয়ে গিয়েছে।’’
বিষ্ণুপুরের এসডিপিও সুপ্রকাশ দাস জানান, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে তলব করে তল্লাশি শুরু হয়েছে। যত ক্ষণ না তিন জনের খোঁজ না মেলে পুলিশের পর্যবেক্ষণে তল্লাশি অভিযান চলবে। তিনি বলেন, ‘‘দ্বারকেশ্বর নদের নিম্ন অববাহিকায় থাকা প্রতিটি থানাকে আমরা সতর্ক করেছি। সকলে খোঁজ রাখছে।’’