কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র ভবনের দখল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর লড়াই মালদহের ইংরেজবাজারে। সোমবার শ্রমিক সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি প্রয়াত বিশ্বনাথ গুহের স্ত্রী লক্ষ্মী গুহের গোষ্ঠীর সঙ্গে বর্তমান শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি সঞ্জীব সাহার দলবলের সংঘর্ষে আহত হলেন বেশ কয়েক জন। সকাল থেকে উত্তেজনা ইংরেজবাজার থানার রথবাড়ি এলাকায়।
কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের নেতা বিশ্বনাথ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নামাঙ্কিত ওই কার্যালয় থেকে দলের কাজকর্ম পরিচালনা করতেন। ১৮ বছর আগে খুন হন বিশ্বনাথ। তাঁর অবর্তমানে জেলা আইএনটিইউসি-র কাজকর্ম দেখাশোনা করতেন স্ত্রী লক্ষ্মী। একসময় তাঁকে সংগঠনের সভাপতিও করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে কংগ্রেসর শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি আমরুদ জামান ঘোষণা করেছেন, মালদহ জেলা কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠনের সভাপতির পদ সামলাবেন সঞ্জীব সাহা। ওই নির্দেশ মানতে নারাজ বিশ্বনাথের স্ত্রী। তিনি এবং তাঁর গোষ্ঠীর লোকজন কার্যালয়ের দখল ছাড়তে চান না। অন্য দিকে, সঞ্জীবের নেতৃত্বে কর্মী-সমর্থকেরা কার্যালয় ‘দখল’ করতে যান সোমবার। প্রথমে দুই পক্ষের তরজা চলে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই তা সংঘর্ষের আকার নেয়। রক্তাক্ত হন দুই পক্ষের বেশ কয়েক জন। লক্ষ্মীর অভিযোগ, তাঁকেও মারধর করা হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘আমি এখনও সভাপতির পদে আছি। তা ছাড়া কার্যালয়টি আমার স্বামীর ব্যক্তিগত সম্পত্তি। এটা কোনও দলের নয়।’’
সঞ্জীব ওই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়। আমাদের বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘দলীয় কার্যালয় জোর করে দখল করে রেখেছেন লক্ষ্মী গুহ। এটা ঠিক নয়।’’ গন্ডগোলের কথা কানে গিয়েছে মালদহ দক্ষিণের কংগ্রেস সংসদ ইশা খান চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘‘বর্তমানে সংগঠনের সভাপতি সঞ্জীব সাহা। সুতরাং ওই অফিসের দায়িত্ব তাঁর হাতেই থাকা উচিত।’’
অন্য দিকে, ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘‘ওদের দলের মধ্যে কী ঘটেছে, এটা আমার দেখার বিষয় নয়। একসময়ে আমি ও বিশ্বনাথ গুহ একসঙ্গে কাজ করেছি। যখন লেবার সেল গঠিত হল, সেই সময় সেখানে মাটি ভরাট করে ছোট্ট একটি ঘর তৈরি করেছিলাম আমরা। পরবর্তী সময়ে বিশ্বনাথ সভাপতি হওয়ার পর ওই জায়গায় অফিস করেছিল। তবে এটা বিশ্বনাথের একার কিংবা পৈতৃক সম্পত্তি নয়। ওঁর স্ত্রী যেটা দাবি করছেন, তা ঠিক নয়।’’