• নতুন নিয়োগে ‘টেন্টেড’দের বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা কোথায়!
    এই সময় | ২৫ জুন ২০২৫
  • এই সময়: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে সাড়ে ৩৫ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ ঘিরে এসএসসি এবং ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের টানাপড়েন তুঙ্গে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) বিজ্ঞপ্তির বিরোধিতা করে সোমবারই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক–শিক্ষিকারা। তাঁদের দাবি, সুপ্রিম নির্দেশে বলাই ছিল, শুধুমাত্র ‘যোগ্য’ চাকরিহারা শিক্ষকরাই নতুন পরীক্ষায় বসতে পারবেন।

    কিন্তু এসএসসি ৩০ মে নতুন যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, সেখানে সুপ্রিম–রায়ে তথাকথিত ‘টেন্টেড’ বা ‘অযোগ্য’ প্রার্থরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন না, এমন কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই।

    যদিও স্কুলশিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের যুক্তি, বিপুল সংখ্যক আবেদন প্রক্রিয়ায় তথাকথিত ‘নন–টেন্টেড’ বা ‘যোগ্য’ এবং ‘টেন্টেড’ বা ‘অযোগ্য’দের আলাদা করার ব্যবস্থা নেই, এটা সত্যি।

    কারণ, ১৬ জুন থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত যে লক্ষ লক্ষ সম্ভাব্য আবেদনকারী নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় বসার আবেদন করবেন, তাঁদের ফিল্টার করা হবে কী ভাবে? আবার এটাও ঠিক, এসএসসি–র ২০২৫ সালের নয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে শীর্ষ আদালতের ৩ এপ্রিলের মূল রায় ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মডিফিকেশন অ্যাপ্লিকেশনের ভিত্তিতে দেওয়া ১৭ এপ্রিল‍ের রায়ের উল্লেখ করেই।

    ফলে কে বা কারা এই নিয়োগে আবেদন করতে পারবেন, সেটা এসএসসি–র নোটিফিকেশনেই স্পষ্ট। আদালতে যে কেউ যেতেই পারেন। তাতে এটা প্রমাণিত হয় না, কমিশন সুপ্রিম শর্ত লঙ্ঘন করছে!

    মামলাকারী ‘যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চে’র অন্যতম কনভেনর মেহবুব মণ্ডল মঙ্গলবার বলেন, ‘সিবিআইয়ের তালিকা মেনে আবেদনের সময়ে এসএসসি টেন্টেড–দের সহজেই চিহ্নিত করতে পারত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই বলা আছে, টেন্টেডরা ২০১৬–এর নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে পারবেন না।

    সে ক্ষেত্রে টেন্টেডদের আবেদন ঠেকাতে কমিশন ওয়েবসাইটে প্রযুক্তিগত ভাবে উন্নততর ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও ভাবতে পারত। এমনকী, ২০১৬ ও ২০২৫ সালের নিয়োগ পরীক্ষার জন্য পৃথক বিজ্ঞাপনও দিতে পারত। তা হলে সহজেই টেন্টেড–দের চিহ্নিতকরণ সম্ভব ছিল।’

    যদিও বিকাশ ভবন ও কমিশনের আধিকারিকদের ব্যাখ্যা, ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল খারিজ মামলার বিরোধিতা করে রাজ্য সরকার। এসএসসি এবং পর্ষদ ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে ৩ এপ্রিলের রায়ের উপরে রিভিউ পিটিশন করেছে। গ্রীষ্মের ছুটির পরে শীর্ষ আদালত খুললে, এই রিভিউ পিটিশনের শুনানির কথা।

    সেখানের রায়ের উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করছে। এখন আবেদনের সময়েই কাউকে বাদ দিতে গেলে সমস্যা হতে পারে। আইনজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ‘নিশ্চিত ভাবে অযোগ্য’ বা ‘টেন্টেড’দের সংখ্যা আলাদা ভাবে উল্লেখ করাই হয়েছে। তাঁদের বাদ দিয়েই তো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা যেত।

    বিকাশ ভবনের কর্তারা অবশ্য বলছেন, ‘টেন্টেড’–দের বাছাইয়ে ইন্টারভিউয়ের আগে ও পরে ফিজি়ক্যাল ভেরিফিকেশনই এসএসসি–র হাতিয়ার হবে। যদি ২০১৬–এর ‘টেন্টেড’ কোনও প্রার্থী যদি আবেদন করে থাকেন, তা হলে ওই ভেরিফিকেশনের সময়েই নাম–রোল নম্বর ধরে ২০১৬–এর লিস্টের সঙ্গে মিলিয়ে তাঁদের আলাদা করা সহজ হবে।

  • Link to this news (এই সময়)