বাড়ির শোয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হল এক প্রৌঢ়ার দেহ। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের জগদ্দল থানা এলাকার শ্যামনগরের পিরতলা রোডে। মৃতার নাম প্রতিমা বেরা (৬২)। তাঁকে খুনের অভিযোগে বিপ্লব সরকার ওরফে ওটু নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রতিমা একাই থাকতেন। প্রতিবেশীরা জানান, এ দিন সকাল আটটা নাগাদ স্থানীয় দুর্গা মন্দির সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা বিপ্লবকে প্রতিমার বাড়িতে ঢুকতে ও কিছু ক্ষণ পরে বেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল। বেলার দিকে প্রৌঢ়ার মৃত্যুর বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরে বিপ্লবকে চেপে ধরেন স্থানীয়েরা। ওই ব্যক্তি বলে, ‘‘ফুল তোলা নিয়ে আমার সঙ্গে বচসা হওয়ায় রাগে আমি ঘরে ঢুকে দিদিকে (প্রতিমা) ধাক্কা দিয়েছিলাম। পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। আমি ধরা পড়ার ভয়ে দরজা খোলা রেখেই বেরিয়ে যাই।’’
যদিও বিপ্লবের এই বক্তব্য অর্ধসত্য বলে দাবি করেছেন প্রতিমার ভাইপো রাজ আচার্য। তিনি বলেন, ‘‘বিপ্লব সুযোগ খুঁজছিল। পিসি অম্বুবাচীর উপোস করেছিলেন। ঘরে ফল কাটার সময়ে বিপ্লব ঢোকে। উদ্দেশ্য ছিল, লুটপাট করা। পিসিকে একা পেয়ে নির্যাতনের পরে গলা টিপে খুন করে। অবিন্যস্ত পোশাকে বিছানার কাছে মেঝেতে পড়ে ছিল পিসির দেহ। আলমারি খোলা ছিল। ব্যাগে করে কিছু নিয়ে গিয়েছে বিপ্লব, সেটা অনেকে দেখেছেন।’’
স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি সুকেশ বিশ্বাস জানান, বিপ্লব ঋণগ্রস্ত। সুকেশ বলেন, ‘‘আমিও এসে যে ভাবে ভদ্রমহিলাকে পড়ে থাকতে দেখেছি, তাতে ধস্তাধস্তি হয়েছিল বোঝা যাচ্ছে। হাত থেকে সোনার চুড়ি খোলার চেষ্টা হয়েছিল। পুলিশ তদন্ত করছে। প্রৌঢ়ার তিন মেয়েকে খবর দেওয়া হয়েছে।’’
ঘটনার খবর পেয়ে আসেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকেরা। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে খুন, না কি অনিচ্ছাকৃত, সেটা তদন্তসাপেক্ষ। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তবে, ব্যস্ত শিল্পাঞ্চলে একা থাকা বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা কতটা নিরাপদ, এই ঘটনার পরে সেই প্রশ্ন উঠেছে।