বুথ লেভেল অফিসার হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বিতর্ক
আনন্দবাজার | ২৫ জুন ২০২৫
ভোটের কাজে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়িত্ব এ বার আরও বাড়ল। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ, বুথ লেভেল অফিসার হিসাবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও দায়িত্ব দেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরেই ওই নির্দেশকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। ইতিমধ্যেই ওই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকে।
কমিশনের নির্দেশ, বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) পদে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সরকারি বেতনভুক্ত ও ডিএ প্রাপক হতে হবে। সেই সঙ্গে এও বলা হয়েছে, এই পদে পূর্ণ সময়ের শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়ার আগে যাচাই করে নিতে হবে তাঁর কোনও রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, কমিশনের তরফে চলতি মাসেই জানানো হয়েছিল, গ্রুপ- সি বা তার উচ্চপদে কর্মরতদের এই দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে এই যোগ্যতার কর্মী না পাওয়া গেলে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কেন্দ্র সরকারের কর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। সেই নিয়মেই খানিক বদল আনা হয়েছে। বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে পূর্ণ সময়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
তবে এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘ভোটার লিস্ট সংশোধন, ভোটার কার্ড তৈরি-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থাকে বুথ লেভেল অফিসারদের উপরে। এবারে সেই দায়িত্ব শুধু শিক্ষকদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হল। নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এমনিতেই স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাবে পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। একটার পর একটা শিক্ষা-বহির্ভূত কাজ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকতার কাজকে ক্রমাগত গৌণ করে তোলা হচ্ছে।’’ আরও বলেন,‘‘এলাহাবাদ কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল শিক্ষকদের শিক্ষা-বহির্ভূত অন্যান্য কাজে লাগানো চলবে না। অন্যান্য সমস্ত ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হচ্ছে, তা হলে এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের বাধ্যতামূলক করা হবে কেন? আমরা এই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’’ তাঁর দাবি, যাঁদের বিএলও-এর দায়িত্ব দেওয়া হবে তাঁদের সম্মানজনক ভাতা দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘‘সারা বছর কাজ করিয়ে প্রায় তিন হাজার টাকা দিয়ে এই কাজ করানো মধ্যযুগীয় শোষণের নামান্তর। নির্বাচন কমিশনে আমরা বার বার দাবি জানিয়েছি, কিন্তু সে ব্যাপারে কমিশনের কোনও হুঁশ নেই!’’