• মুছে গেল বিভেদের ছবি, মিড-ডে মিলের হাঁড়ি এক হলো বর্ধমানের সেই স্কুলে
    এই সময় | ২৫ জুন ২০২৫
  • গোপাল সোনকার ও সূর্যকান্ত কুমার

    সিলিন্ডার এক, রান্না হচ্ছিল আলাদা উনুনে। মিড ডে মিলের রান্নায় ধর্মীয় ভেদাভেদ দেখা গিয়েছিল পূর্ব বর্ধমানের নসরতপুরের কিশোরীগঞ্জ মনমোহনপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। খবর প্রকাশিত হতেই রাতারাতি সিদ্ধান্ত বদল। এক হলো রান্নার উনুন, এক হলো রান্নার হাঁড়ি।

    অভিযোগ ছিল, কিশোরীগঞ্জ মনমোহনপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা ওভেনে রান্না হতো। একটি সিলিন্ডার। তা থেকে থেকে দু'টি আলাদা গ্য়াসের পাইপ দু'টি ওভেন লাগিয়ে রান্না হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। যার জন্য খরচও বাড়ছিল স্কুলের।

    স্কুলে জয়েন করার পরেও বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষ। মঙ্গলবার রান্না হয়নি স্কুলে। বুধবারই বিষয়টি নিয়ে মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি, বিদ্যালয় পরিদর্শকদেরও ডাকা হয়। অন্যদিকে জেলাশাসকের তরফে স্কুলে একটি পরিদর্শক দল পাঠানো হয়েছিল। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এ বার থেকে একসঙ্গে মিড ডে মিলের রান্না করা হবে।

    স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাপস ঘোষ বলেন, ‘আমি এই স্কুলে এক বছর হলো এসেছি। তখন থেকেই দেখছি, এ ভাবেই রান্না হচ্ছে। তবে আলাদা রান্না করা একেবারে কাম্য নয়। আমি আসার পর স্কুলের পরিচালন কমিটিকে জানিয়েছিলাম। তবে আজ থেকে একসঙ্গেই রান্না হচ্ছে।’

    অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা) প্রতীক সিং জানিয়েছেন, জেলাশাসকের নির্দেশে একটি টিম বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। কেন এই রকম দু'টি আলাদা ওভেনে রান্না হচ্ছিল, কে নির্দেশ দিয়েছিল? সবকিছুই খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তের ভিত্তিতে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। রিপোর্টের ভিত্তিতে যথাযত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    জানা গিয়েছে, দু’জন রাঁধুনির মধ্যে যিনি হিন্দু তিনি রান্না করলেন। মুসলিম রাঁধুনি তাঁকে সাহায্য করলেন। তবে আজ মিড-ডে মিল খেয়েছে মাত্র ১৫ জন পড়ুয়া। তার মধ্যে একজন হিন্দু পড়ুয়া। বৈঠক থেকে বেরিয়ে মুসলিম অভিভাবকরা একসঙ্গে খেতে রাজি হলেও সিংহভাগ হিন্দু অভিভাবক এটা মেনে নিতে পারছেন না বলে জানান। প্রধান শিক্ষক জানান, বৈঠকে স্থির হয়েছে এ বার একসঙ্গেই রান্না হবে। কয়েকজন হিন্দু অভিভাবক জানিয়েছেন, বাড়ি গিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে দেখবেন।

  • Link to this news (এই সময়)