• ৩৭ ঘণ্টার উড়ান শেষে দেশে পা আবিরের
    এই সময় | ২৫ জুন ২০২৫
  • এই সময়, আসানসোল: অবশেষে স্বস্তি ফিরল আসানসোলের ডিপোপাড়ার মুখোপাধ্যায় পরিবারে। ইজ়রায়েল থেকে ৩৭ ঘণ্টার বিমানযাত্রা সেরে মঙ্গলবার সন্ধেয় কলকাতা বিমানবন্দরে পা রাখেন পদার্থবিদ্যায় পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ করা আবির মুখোপাধ্যায়।

    বিমানের কয়েকজন সহযাত্রীর সঙ্গে সেলফি তুলে আবির পাঠান পরিবারের সদস্যদের। জানান, তিনি সুস্থ রয়েছেন। আজ, বুধবার তিনি ফিরবেন নিজের বাড়িতে। তার আগে দেখা করবেন কল্যাণীতে তাঁর নিজের ইনস্টিটিউটের অধ্যাপকদের সঙ্গে।

    ছেলের দেশে ফেরার খবর পাওয়ার পরে স্বস্তি ফিরেছে আবিরের বাবা রেলকর্মী শুভাশিস মুখোপাধ্যায়েরও। তিনি বলেন, ‘ছেলে ইজ়রায়েল থেকে রওনা হলেও উৎকণ্ঠা কাটতে চাইছিল না। কিন্তু কলকাতা বিমানবন্দরে পা রাখার পরে ওর ছবি দেখার পরে সমস্ত সংশয় কেটে গিয়েছে। এ বার ওর ঘরে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছি।’

    তেল আভিভ থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইজ়রায়েলের রেহভোত শহরে থাকতেন আবির। সেখানে পদার্থবিদ্যায় পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ করতে গত এক বছর ধরে রেহভোতের ওয়েজ়ম্যান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সে কাজ করেছেন। সেই ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাসে গত ১৪ জুন মিসাইল হানা হয়েছিল। যদিও ইনস্টিটিউট থেকে খানিকটা দূরে আলাদা থাকায় সুরক্ষিত ছিলেন আবির।

    কী ভাবে আবির ইজ়রায়েল থেকে বেরিয়ে এলেন? জানা গিয়েছে, তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল জর্ডন বর্ডার থেকে বিমান ধরতে হবে। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ছ’টা নাগাদ আবির একটি গাড়িতে এসে পৌঁছন জর্ডন বর্ডারে।

    সেখানে পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে প্রায় ঘণ্টা দুয়েক কাজকর্মের পরে ১৮০ জন ভারতীয়কে নিয়ে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কুইন আলিয়া বিমানবন্দর থেকে এয়ারফোর্সের একটি বিমান রওনা হয় ভারতের উদ্দেশে। মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টা নাগাদ গাজিয়াবাদের কাছে একটি এয়ারবেসে নামে বিমান।

    আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে বাংলার যাত্রীদের পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই বাসেই আবির–সহ অন্য যাত্রীরা পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছন। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ পালাম থেকে বিমান ওড়ে এবং কলকাতায় নামে সন্ধে ৬টা ৪০ নাগাদ। সবমিলিয়ে ৩৭ ঘণ্টার উড়ান–যাত্রা শেষ করে কলকাতায় পা রাখেন আবির।

    ডিপোপাড়ার বাড়িতে বসে বাবা শুভাশিস বলছিলেন, ‘ছবিতে ওর হাসিমুখ দেখে তো সব ভালো আছে বলেই মনে হচ্ছে। বাকিটা ছেলে ঘরে ফেরার পরেই জানতে পারব।’ যোগ করলেন, ‘ইজ়রায়েলের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, সেটা অবশ্য এখনও জানতে পারিনি। ফোনে সেই সময়ে কিছু বলার মতো অবস্থাও ছিল না। আমরাও তো টেলিভিশনে যুদ্ধের যে সমস্ত ছবি দেখেছিলাম, তাতে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। আজ সেই দুশ্চিন্তা দূর হলো।’

  • Link to this news (এই সময়)