আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। সেই ভোটে বিজেপি ৫০-এর নীচে আটকে যাবে বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের সাতগাছিয়ার শ্রীকৃষ্ণপুর বোরহানপুর স্কুল ফুটবল ময়দানে তাঁর ‘নিঃশব্দ বিপ্লব ২০২৫’-এর উদ্বোধন হয়। সেই মঞ্চ থেকে বিজেপিকে কার্যত ধুয়ে দেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। সাংসদের দাবি, বিদ্বেষের রাজনীতি করার চেষ্টা করছে বিজেপি। তবে বাংলার মানুষ তা ধরে ফেলেছেন।
এ দিন সাতগাছিয়ার সভা থেকে সাংসদ হিসেবে নিজের কাজের রিপোর্ট কার্ড পেশ করে উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৪ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত সাংসদ হিসেবে তিনি কী কী কাজ করেছেন, তা পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করেন এ দিন। সেই মঞ্চ থেকেই বিজেপিকে তুলোধোনা করেন অভিষেক।
সাতগাছিয়ার সভা থেকে অভিষেক অভিযোগ তোলেন, বিজেপি নেতারা ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স দিয়ে প্রতিনিয়ত তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেন। বঙ্গ বিজেপির নেতাদের উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘দিল্লির যে নেতাদের পাঞ্জাবি ধরে রাজনীতি করেন, তাঁদের ক্ষমতা নেই আমাকে ভয় দেখিয়ে মেরুদণ্ড বিক্রি করাবে। আমরা বাংলার সুসন্তান। আমরা বশ্যতা স্বীকার করতে জানি না। আপনি যত ইডি-সিবিআই-ইনকাম ট্যাক্স লাগাবেন, আমরা লড়াইয়ের সংকল্পে ততো দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হবো, উন্নয়ন ততো ত্বরান্বিত হবে।’
এ দিন সভামঞ্চ থেকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘২০২১-এ বিজেপির চাকা ৭৭-এ আটকে গিয়েছিল। ২০২৬-এর ভোটে তা ৫০-এর নীচে থাকবে।’ অভিষেকের সংযোজন, দিঘার জগন্নাথ মন্দির মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে উদ্বোধন হয়েছে বলে, জগন্নাথদেবকে নিয়েও রাজনীতি করছে বিজেপি। তাঁর কথায়, ‘জয় শ্রীরাম বলে ভোট চাইতেন, অথচ অযোধ্যায় গোহারা হেরেছেন। দেখুন প্রভু রামের কী লীলা। রাম মন্দিরকে সামনে রেখে সারা দেশে ভোট চাইল, অবকি বার ৪০০ পার বলল, ২৪০-এ আটকে গেল।’
একই সঙ্গে লোকসভা ভোটের ফলাফল নিয়েও অভিষেক বলেন, ‘আমি ডায়মন্ড হারবারে জেতায় কেস করেছে হাইকোর্টে। আগামী ভোটের আগে এখনও চার বছর সময় আছে। নিজেদের মধ্যে ঠিক করো, কে দাঁড়াবে এখানে। আমি কথা দিচ্ছি, এক ভোট হলেও ব্যবধান বাড়াব। মানুষের উপর আমার আস্থা রয়েছে। গত ভোটে ৭ লক্ষ ১০ হাজারের বেশি ব্যবধানে জিতেছিলাম। ২০২৯-এর ভোটে তা ৮ লক্ষ করব।’
বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্র সরকারের বকেয়া আটকে রাখার বিষয়টিকে ‘প্রতিশোধের রাজনীতি’ বলে তুলে ধরেন অভিষেক। বাংলার মানুষ ভোটবাক্সে বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করায়, দিল্লি থেকে একের পরে এক প্রকল্পের টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে বলেও এ দিন অভিযোগ করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
অভিষেকের বার্তা, ‘মানুষের সঙ্গে প্রতিশোধের রাজনীতি চলে না। মানুষ চেয়েছে বলে কেউ প্রধানমন্ত্রী, কেউ সাংসদ, কেউ মুখ্যমন্ত্রী, কেউ বিধায়ক। মানুষ যদি চায়, আকাশছোঁয়া দম্ভ চূর্ণ করে দিতে ১০ সেকেন্ডও লাগবে না।’