একই রাজ্যের দু’টি স্কুল, ছবিটা ভিন্ন। নেপথ্যে সেই মিড-ডে মিল। একটি স্কুলে একই পাতে মিড ডে মিলের খাবার খেয়েছিল দুই ভিনধর্মী শিশু। অন্য স্কুলে ভিন ধর্মী পড়ুয়াদের জন্য রান্না হচ্ছে পৃথক উনুনে। মালদার মোথাবাড়ির স্কুলের এক থালায় ভাত মেখে দুই স্কুল পড়ুয়ার খাবার দৃশ্য ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। চর্চা শুরু হয়েছিল রাজ্য জুড়ে। সেরকমই মঙ্গলবার বর্ধমানের একটি স্কুলে একই সিলিন্ডার থেকে দুটি আলাদা উনুনে রান্নার দৃশ্যেও বিতর্কের সূত্রপাত। যদিও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে সেই ‘অনিয়ম’-এ রাশ টানার চেষ্টা চলছে।
কিন্তু এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে মালদার মোথাবাড়ির পঞ্চানন্দপুরের ওলিটোলা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদেরও। সহকারি প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ওই স্কুলের ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। নিজেদের বাঙালি বলতে লজ্জিত বোধ করছি। যে বাংলা স্বাধীনতার লড়াইয়ে ধর্ম-জাতি নির্বিশেষে একে অন্যের কাঁধে কাঁধ রেখে লড়েছিল, সেখানে এরকম একটি স্কুলের ছবি উঠে আসবে তা কল্পনার বাইরে।’
মালদার মোথাবাড়ির পঞ্চানন্দপুরের ওলিটোলা প্রাথমিক স্কুলে এই থালায় দুই পড়ুয়ার ভাত খাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। যদিও, সম্প্রীতির কথা উঠে এলেও একই থালায় কেন দু’জনকে খেতে দেওয়া হয়েছিল? শিশুদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা দপ্তর জবাব চেয়ে পাঠায়।
তবে সম্প্রীতির বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, ‘আমাদের স্কুলে যে সম্প্রীতি রয়েছে, তা এর আগেও এক থালায় ভিন সম্প্রদায়ের দুই পড়ুয়া খাওয়ার মাধ্যমেই উঠে এসেছিল। কিন্তু আজকের এই ঘটনাকে (বর্ধমানের ঘটনা) কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা সকলের লজ্জা।’
উল্লেখ্য, বর্ধমানের নসরতপুরের কিশোরীগঞ্জ মনমোহনপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একই গ্যাস সিলিন্ডার থেকে দুটি ভিন ধর্মী পড়ুয়াদের জন্য আলাদা উনুনে রান্না হওয়ার দৃশ্য উঠে আসে। যদিও, খবরটি প্রচারিত হওয়ার পরেই আজ, বুধবার থেকে একই উনুনে রান্না করা হচ্ছে বলে জানান সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক।