ঘুচে গেল বিভেদ, পূর্বস্থলীর সেই স্কুলে এক হেঁশেলেই রান্না হবে হিন্দু-মুসলিম পড়ুয়াদের
আজ তক | ২৬ জুন ২০২৫
দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর ভাঙল ধর্মীয় বিভাজনের প্রাচীর। পূর্ব বর্ধমান জেলার নাদনঘাট থানার অন্তর্গত কিশোরীগঞ্জ মনমোহনপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় বিতর্কের মুখে পড়ে সিদ্ধান্ত নিল— ধর্ম নয়, শিক্ষাই একমাত্র পরিচয়। হিন্দু ও মুসলিম পড়ুয়াদের জন্য আলাদা রান্না, আলাদা রাঁধুনি ও পৃথক বাসনপত্রের নিয়মে চলছিল মিড ডে মিল পরিষেবা। তবে অবশেষে শিক্ষক-অভিভাবকদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হল, এবার থেকে সবাই একসঙ্গে একই রান্না খাবে।
স্কুলটিতে পড়ুয়া সংখ্যা ৭২। তার মধ্যে হিন্দু ৪৩ জন, মুসলিম ২৯ জন। এতদিন এই ৭২ জন শিশুর মধ্যে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন করে রান্না হত আলাদা দুটি ওভেনে, একটি সিলিন্ডার থেকেই দু’টি পাইপের সাহায্যে। রান্নার জন্য ছিল আলাদা রাঁধুনি, আলাদা হাঁড়ি-কড়াই, এমনকি খুন্তিও। বছরভর এমন ব্যবস্থায় খরচও বাড়ছিল। এই অযৌক্তিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে এগিয়ে আসেন প্রধান শিক্ষক তাপসবাবু। তিনি বলেন, 'আমি দুটো রান্না চাই না। স্কুলের উন্নতির জন্য একসঙ্গেই ভালো খাবার দিতে চাই।'
এই ইস্যুতে বুধবার একটি বৈঠক ডাকা হয় অভিভাবকদের সঙ্গে। উপস্থিত ছিল পুলিশও। বহুদিন ধরে চলে আসা ধর্মীয় ভেদাভেদের প্রথা অবশেষে ভেঙে গেল। অভিভাবকরাও একমত হন— শিশুদের একসঙ্গে খাওয়া উচিত, একসঙ্গে শেখা উচিত।
তাপসবাবু জানান, 'স্কুল শিক্ষা দেবে মিলনের, বিভাজনের নয়। আমরা চাই এই স্কুল থেকে সম্প্রীতির বার্তা ছড়াক।' শিক্ষকদেরও মত, ধর্ম নয়, ঐক্যই বড়ো শিক্ষা। এখন থেকে সমস্ত পড়ুয়ার জন্য একসঙ্গে রান্না হবে, থাকবে না কোনও আলাদা বাসনপত্র বা পৃথক রাঁধুনি।