• জলস্বপ্ন প্রকল্পে গতি আনতে মরিয়া পিএইচই, বকেয়া মেটানোর দাবিতে বিক্ষোভ ঠিকাদারদের
    বর্তমান | ২৬ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: চলতি বছরের মধ্যেই জলপাইগুড়ি জেলার ৪ লক্ষ ৩৬ হাজার বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার টার্গেট। সেই লক্ষ্যে ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পে গতি আনতে মরিয়া জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। জেলাশাসক শমা পারভীনের হস্তক্ষেপে সম্প্রতি জমিজট মিটে যাওয়ায় প্রকল্পের কাজে গতি এসেছে। ইতিমধ্যে ২ লক্ষ ৩০ হাজার বাড়িতে সংযোগ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ৬০টির বেশি ওভারহেড রিজার্ভার তৈরির কাজ শেষ। বাকিগুলির কাজ চলছে। 

    মোট পাম্প হাউসের ৭০ শতাংশ তৈরি হয়ে গিয়েছে। তবে, বকেয়ার দাবিতে ঠিকাদাররা আন্দোলনে নামায় ফের কাজের গতি থমকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা দপ্তরের আধিকারিকদের। গোটা রাজ্যের পাশাপাশি জলপাইগুড়িতেও তিনদিন ধরে পিএইচই’র কাজ বন্ধ রেখে ঠিকাদাররা আন্দোলন চালান। বুধবার তাঁরা জলপাইগুড়ি শহরে দপ্তরের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে দ্রুত বকেয়া না মেটালে পুরোপুরি কাজ বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন। আন্দোলনকারী ঠিকাদারদের অভিযোগ, গত দশমাস ধরে পিএইচই’র কাছ থেকে তাঁরা কোনও টাকা পাচ্ছেন না। জলের লাইন রক্ষণাবেক্ষণের কাজে যুক্ত ঠিকাদারদের অভিযোগ, গত দেড় বছর ধরে তাঁরা টাকা পাচ্ছেন না। ফলে ভাল্ভ অপারেটরদের মাইনে দিতে পারছেন না। 

    জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের জলপাইগুড়ির এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সোমনাথ চৌধুরী বলেন, চলতি বছরের মধ্যেই আমরা জেলায় জলস্বপ্ন প্রকল্পের কাজ শেষ করার টার্গেট নিয়েছি। জেলাশাসকের হস্তক্ষেপে জমিজট কেটে যাওয়ায় প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে। ঠিকাদারদের আন্দোলন প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, জেলায় ৫০ কোটি টাকার মতো বিল বকেয়া রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। 

    গত নভেম্বরের গোড়ায় জলপাইগুড়িতে এসেছিলেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায়। সেসময় দপ্তরের আধিকারিকরা মন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, জেলায় ৪৮.৮৭ শতাংশ বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। যা শুনে মন্ত্রী আধিকারিকদের নির্দেশ দেন, নভেম্বরের মধ্যে যেন অন্তত ৫০ শতাংশ বাড়িতে জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু মন্ত্রী ঘুরে যাওয়ার তিনমাস পরও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের রিপোর্টে দেখা যায়, জেলায় ৫০.৮ শতাংশ বাড়িতে জলের সংযোগ পৌঁছেছে। সুতরাং কাজের গতি যে শ্লথ, তা স্পষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু কেন? তা খতিয়ে দেখতে পিএইচই আধিকারিকদের নিয়ে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে বৈঠক করেন জেলাশাসক শমা পারভীন। তখনই দেখা যায়, বহু জায়গায় জমিজটের কারণে জলস্বপ্ন প্রকল্পের কাজ থমকে যাচ্ছে। কোথাও বনদপ্তরের জমির উপর দিয়ে পাইপলাইন বসানোর কাজে ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট মিলছে না। এরপরই জলস্বপ্ন প্রকল্পে জট কাটাতে ময়দানে নামেন খোদ জেলাশাসক। তাতেই সমাধান হয়। 

     নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)