সংবাদদাতা, তপন: বাজারে কাঁচালঙ্কার দাম রেকর্ড পরিমাণ পড়ে যাওয়ায় মাথায় হাত তপন ব্লক সহ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিদের। বর্তমানে প্রতি কেজি কাঁচালঙ্কা বিক্রি হচ্ছে মাত্র চার থেকে দশ টাকায়। যেখানে শুধু জমি থেকে তুলতেই শ্রমিকদের দিতে হচ্ছে কেজিতে পাঁচ টাকা। এই অবস্থায় উৎপাদন খরচ, পরিবহণ খরচ সব মিলিয়ে চাষিরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ক্ষোভে অনেক চাষি রাস্তায় ধারে লঙ্কা ফেলে দিচ্ছেন।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লক মূলত কৃষি নির্ভর। এবছর তপন ছাড়াও জেলাজুড়ে ব্যাপক কাঁচা লঙ্কার চাষ হয়েছে। জেলার মধ্যে কাঁচালঙ্কার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার তৈরি হয়েছে গঙ্গারামপুর ব্লকের ফুলবাড়ি এলাকায়। এখানে প্রতিদিন আশপাশের ব্লকের শতাধিক চাষি লঙ্কা নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে বাজারে ব্যাপক ধস নেমেছে। স্থানীয় চাষিরা বলছেন, হঠাৎ এতটা দাম পড়ে যাবে তা কেউ ভাবেননি। একদিকে ঘনঘন বৃষ্টির জন্য জমির লঙ্কা পচে যাচ্ছে, আবার পাইকাররা খুব কম দামে লঙ্কা কিনছেন। ফলে ফসল নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে বিক্রি করেও লোকসান কম নয়।
তপনের চকবলিরাম গ্রামের লঙ্কা চাষি বিশু সরকার বলেন, এক বিঘা জমিতে লঙ্কা চাষ করেছি। খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। এখনও পর্যন্ত আট হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়েছে। লঙ্কা নিয়ে বাজারে গিয়েছিলাম। মাত্র চার টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হয়েছে। অথচ মাঠ থেকে তুলতেই কেজিতে পাঁচ টাকা খরচ হচ্ছে। সরকার যদি কাঁচালঙ্কার ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণ না করে, তাহলে আমাদের পথে বসতে হবে। নিশ্চিন্তার বাসিন্দা লঙ্কা ব্যবসায়ী সাহাজাদ সরকার বলেন, ঘনঘন বৃষ্টির জন্য লঙ্কা খুব তাড়াতাড়ি পচে যাচ্ছে। আবার বাজারে প্রচুর আমদানি হওয়ার ফলে চাহিদা অনুযায়ী দাম বাড়ছে না। তবে, ভালো মানের লঙ্কা ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে কেনা হচ্ছে। এপ্রসঙ্গে তপন পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বাসন্তী বর্মন বলেন, চাষিদের সমস্যার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। জেলা কৃষি দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে লঙ্কার ন্যায্য মূল্য চাষিরা যাতে পান, তার ব্যবস্থা করা হবে। আমরা সবসময় চাষিদের পাশে আছি। দাম কমে যাওয়ায় ক্ষোভে রাস্তায় লঙ্কা ফেলে দিয়েছেন চাষিরা।-নিজস্ব চিত্র