• প্রেসক্রিপশন ছাপিয়ে চেম্বার খুলে ডাক্তারি, আটক ভুয়ো চিকিৎসক
    বর্তমান | ২৬ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ময়নাগুড়ি: ময়নাগুড়ির শহরে রীতিমতো চেম্বার খুলে প্রেসক্রিপশন ছাপিয়ে চিকিৎসা করছিলেন এক যুবক। বিনা পয়সায় চিকিৎসা করা হবে বলে সম্প্রতি গ্রামেগঞ্জে লোক পাঠিয়ে প্রচার করা হলেও এদিন রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া শুরু করতেই সন্দেহ হয়। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মৌসুমি সেন প্রেশার মাপতে এলে তাঁর কাছে ৫০ টাকা চাওয়া হয়। যুবকের আচরণে সন্দেহ হওয়ায় এবং কথাবার্তায় অসঙ্গতি মেলায় পাকড়াও করে পুলিসের হাতে তুলে দেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ঝুলন সান্যাল। ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ বলেন, ওই যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যদিও ফালাকাটার বাসিন্দা অভিযুক্ত যুবক জানান, তিনি ডাক্তার নন। রোগীদের পরামর্শ দিচ্ছিলেন। কাউকে ওষুধ লিখে দেওয়া হয়নি। 

    পুলিস সূত্রে খবর, ডাক্তার পরিচয় দেওয়া যুবক গ্রামেগঞ্জে কিছু এজেন্ট নিয়োগ করেছিলেন। তাদের মাধ্যমে প্রচার করে শহরের চেম্বারে লোক নিয়ে আসা হতো। রোগী সংগ্রহ করার জন্য এজেন্টদের দেওয়া হয়েছিল চাকরির প্রতিশ্রুতি। এজন্য ওই ভুয়ো চিকিৎসক ময়নাগুড়ির বিভিন্ন এলাকার যুবক, যুবতীদের কাছ থেকে প্রায় ১৬ হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন। প্রতারিতরাই এদিন থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। 

    বুধবার ওই স্বাস্থ্য শিবিরে মহিলা কাউন্সিলার প্রেশার মাপাতে যান। তাঁর কাছে টাকা চাওয়া হলে সন্দেহ হয়। কাউন্সিলার উপস্থিত লোকজনের কাছে জানতে চান,আপনারা কেন এখানে? তাঁরা জানান ডাক্তার দেখাতে এসেছেন। ল্যাপটপ খুলে ‘চিকিৎসা’ করছিলেন অভিযুক্ত যুবক। কাউন্সিলারের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে যুবক ভ্যাবাচ্যাকা খান। নিজেকে আরএমপি বলেন। পরে বলেন কনসালট্যান্ট। অথচ রোগীরা জানান, তিনি প্রেসক্রিপশনে ওষুধ লিখে দিচ্ছেন। 

    কাউন্সিলার ঝুলন সান্যাল বলেন, রীতিমতো চেম্বার খুলে বসেছিলেন ওই যুবক। নিজেকে ডাক্তার বলে প্রথমে পরিচয় দেন। পরে বলেন কনসালট্যান্ট। ছেলেটি লোক ঠকানো ব্যবসা করছেন। 

    ডাক্তার দেখাতে আসা বার্নিশের কালীচরণ রায় বলেন, ক’দিন আগে পাড়ায় কয়েকজন ছেলে গিয়ে জানিয়েছিল ডাক্তার আসবে। এর আগেও ইনি ওষুধ সহ ২৮০০ টাকা নিয়েছেন। আর এক রোগী কৌশল্যা রায় বলেন, কিডনির সমস্যা। দু’মাস ধরে আসছি। আমার কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত ২৪০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। গ্রামে ক’দিন আগে ছেলেরা গিয়েছিল। তারাই বাড়ি গিয়ে বলে এসেছে, ডাক্তারবাবু বুধবার বসবেন। এবার বিনামূল্যে দেখানো যাবে। অথচ এখানে এসে শুনি টাকা লাগবে। 

    এদিকে, ময়নাগুড়ির বাসিন্দা বিবেক রায়, দেবজিৎ রায়, লোহিত সরকার অভিযোগ করে বলেন, বলা হয়েছিল ভালো কাজের সুযোগ আছে। স্বাস্থ্য বিষয়ক কাজ। আমরা জলপাইগুড়িতে ইন্টারভিউ দিয়েছি। এরপর আমাদের জানানো হয়েছিল দ্রুত জয়েন করতে হবে। সেই মোতাবেক ১৬ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। যদিও পরে দেখি এই কাজ।
  • Link to this news (বর্তমান)