তরুণের আধার কার্ড ব্যবহার করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিচ্ছেন মহিলা! বিডিওকে অভিযোগ
বর্তমান | ২৬ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, কালিয়াচক: এ যেন ভূতুড়ে গল্প! তিনি কোনওভাবেই লক্ষ্মী নন। আদ্যপান্ত এক তরুণ যুবক। বয়স ২০। অথচ দিব্যি পেয়ে যাচ্ছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, ২৫ বছরের নীচে হলে মহিলারা এই ভাতা পাবেন না। নিয়ম অনুযায়ী মহিলা ছাড়া এই প্রকল্পে আবেদনও করা যাবে না। সেখানে ২০ বছরের এক তরুণের নামে এই টাকা ঢোকায় শোরগোল পড়েছে। এদিকে যোগ্য মহিলারা বিভিন্ন সময় কয়েকবার ব্লক অফিস থেকে শুরু করে দুয়ারে সরকারে আবেদন করেও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভাতা পাননি।
কিন্তু বিষয়টি সামনে এল কীভাবে? বুধবার সকালে প্রতিদিনের মতোই মোবাইল হাতে নিয়ে স্ক্রিন স্ক্রল করছিলেন কালিয়াচক-১ ব্লকের অন্তর্গত যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নয়াগ্রামের আমানুর রহমান। এর মধ্যেই তিনি তাঁর স্ত্রীর লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের স্টেটাস চেক করতে যান। মোবাইল নম্বর দিয়ে চেক করতেই স্ত্রী ও ছেলের নাম দেখা যায়। বিষয়টি দেখেই তিনি হতবাক হয়ে যান। কারণ,তাঁর ছেলের ইংরেজি নামের অক্ষরে একটু পরিবর্তন ছিল। শুধুমাত্র একটি অক্ষরের ফারাক। এদিকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরটিও তাঁর ছেলের নয়। কৌতূহলবশত বেনিফিশিয়ারি আইডি টুকে আবার কপি পেস্ট করে ডিটেলস চেক করতে গিয়েই দেখেন, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে তাঁর মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে টাকা তোলা হচ্ছে। এছাড়াও ব্যবহার করা হয়েছে তাঁর ছেলের আধার নম্বরও। এরপরই তিনি বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেন। আমানুরের বুঝতে বাকি থাকে না, কেউ বা কারা তাঁর ছেলের আধার নম্বর এবং তাঁর ফোন নম্বর ব্যবহার করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা তুলছে। এরপরই তিনি ছেলেকে ডেকে পাঠান। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে জানান, এ বিষয়ে তার কিছুই জানা নেই। কাউকে কোনও নথিও তিনি দেননি।
আমানুরের অভিযোগ, কেউ বা কারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমার ফোন নম্বর এবং আমার ছেলের আধার কার্ডের নম্বর হাতিয়ে নিয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আবেদন করেছে ২০২১ সালে। এরপর থেকে লাগাতার তারা অসাধু উপায় অবলম্বন করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করছে। যখন তারা কালিয়াচক ১ ব্লকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আবেদন জানিয়েছিল, সেসময় আমার ছেলের বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। তার কার্ড ব্যবহার করে টাকা তুলছে কেউ।
আমানুরের কথায়, এই কাজ কোনও অসাধু চক্র করেছে। তাও আবার আমার ছেলের আধার কার্ডে জালিয়াতি করে। এনিয়ে ব্লক অফিস ও কালিয়াচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তদন্ত করে দ্রুত সমাধান করা হোক।
এবিষয়ে মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, একটি অভিযোগ হয়েছে। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতীকী চিত্র