হানাহানি অতীত, উন্নয়নই শালবনীর কাশিজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্য
বর্তমান | ২৬ জুন ২০২৫
রাজদীপ গোস্বামী, কাশিজোড়া: মাওবাদী আন্দোলনের সময় মাসের পর মাস ঘরছাড়া থাকতে হয়েছে গ্রামের বাসিন্দাদের। জমির ফসল তো বটেই, বাড়ির আসবাবপত্র, সবকিছুই লুট হয়ে যেত। তবে বর্তমানে শালবনী ব্লকের কাশিজোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সারা বছর ধরে উন্নয়নমূলক নানা প্রকল্পের কাজ হচ্ছে। গত অর্থবছরে এই পঞ্চায়েত এলাকায় শুধু পানীয় জলের জন্য ২৬টি প্রকল্প রূপায়িত হয়েছে। তারজন্য প্রায় ৩৩লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। একইসঙ্গে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচে বহু পঞ্চায়েতকে পিছনে ফেলে দিয়েছে তারা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আগে এই পঞ্চায়েত এলাকায় আগে রাজনৈতিক হানাহানি লেগেই থাকত। এখন শান্তি ফিরে এসেছে। উন্নয়ন হচ্ছে, তবে রাস্তার সমস্যা রয়েছে।
পঞ্চায়েত প্রধান নমিতা সোরেন ও সন্টু দোলই বলেন, আমাদের এলাকায় একাধিক প্রকল্পের কাজ হয়েছে। চলতি অর্থবছরেও বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়াই প্রধান লক্ষ্য। কাজের গতি আরও বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ সুব্রত সানি বলেন, আগে এলাকার মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারত না। বাড়িতে ঢুকে দুষ্কৃতীরা লুটপাট চালাত। বহু মানুষ দীর্ঘদিন ঘরছাড়া ছিল। বর্তমানে সেই সমস্যা নেই। উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাশিজোড়ার ১৭টি আসনের মধ্যে ১৬টি পায় তৃণমূল। একটি আসন পেয়েছিল বিজেপি। এই পঞ্চায়েত এলাকায় গত অর্থবছরে ছ’টি রাস্তা সংস্কার করা হয়। খরচ হয় প্রায় ১৮লক্ষ টাকা। একইসঙ্গে জলনিকাশির সুবিধার জন্য পাঁচটি ড্রেন তৈরি করা হয়। খরচ হয়েছে ১৩লক্ষ টাকা। পারাং নদীর উপর কাশিজোড়া ও গড়মাল পঞ্চায়েতের মধ্যে সংযোগকারী সেতু তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। মেদিনীপুরের সাংসদ জুন মালিয়ার উদ্যোগে সেতুটি নির্মাণ হচ্ছে। এতে খুশি এলাকার বাসিন্দারা। এলাকায় বায়োডাইভার্সিটি পার্ক তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।
তবে রাস্তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ আছে। তাঁদের বক্তব্য, বেশকিছু রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। এছাড়া হাতির সমস্যাও রয়েছে। পাশাপাশি বহু এলাকায় পর্যাপ্ত আলো নেই। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি লক্ষণ হেমব্রম বলেন, মানুষের সব সমস্যা সমাধান হয়নি। তবে, আমরা চেষ্টা করছি। এলাকায় উন্নত পরিষেবা দেওয়ার জন্য মাঝেমধ্যেই বৈঠক হয়। রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ সিংহ বলেন, এই এলাকার মানুষ সিপিএমের অত্যাচার দেখেছেন। অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। তাই তাঁরা উন্নয়নের পাশেই সর্বদা থাকবেন, এটাই আমাদের বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র