তমলুক শহরে পাম্পহাউস চালু জল পেলেন ৩টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা
বর্তমান | ২৬ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: তমলুক শহরে জলসঙ্কট মোকাবিলায় এক কোটি টাকা স্পেশাল গ্র্যান্ট দিয়েছিল রাজ্য সরকার। বুধবার পুরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডে সেই তহবিলের ৪৯লক্ষ টাকা ব্যয়ে পাম্পহাউস চালু হল। এরফলে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা জলের সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন পুরসভার ৭, ৮ ও ১২নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৩০০পরিবার। এদিন ৮নম্বর ওয়ার্ডে অধিকারীপাড়ায় এই উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠান হয়। সেখানে পুরসভার চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়, ভাইস চেয়ারপার্সন লীনা মাভৈ, জল দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলার বৈদ্যনাথ সিনহা, কাউন্সিলার সৌমেন চক্রবর্তী প্রমুখ ছিলেন। এছাড়াও কাউন্সিলার সুফিয়া বেগম, তৃপ্তি ভট্টাচার্য, চন্দন দে ও স্বস্তিকা দাস প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
১৬১বছরের পুরনো তাম্রলিপ্ত পুরসভায় এখনও ভরসা ভূগর্ভস্থ জল। প্রতিনিয়ত পরিবার সংখ্যা বাড়ছে। সেইসঙ্গে জলের চাহিদাও বাড়ছে। কিন্তু, চাহিদার তুলনায় জোগান কম থাকায় বহু জায়গায় জলের সঙ্কট দেখা দেয়। শুধু গ্রীষ্মকালে নয়, সারা বছর কিছু জায়গায় জলের সমস্যা থাকে। পুরসভা থেকে ট্যাঙ্ক পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। শহরে জলসঙ্কটের বিষয়টি পুরসভার পক্ষ থেকে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের নজরে আনা হয়। পুরসভার চেয়ারম্যান এনিয়ে বারবার তদ্বির করেন। তারপর এক কোটি টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য। সেই টাকায় শহরে ৮ ও ২০নম্বর ওয়ার্ডে দু’জায়গায় পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৮নম্বর ওয়ার্ডে অধিকারীপাড়ায় শীতলা মন্দির প্রাঙ্গণে পাম্প বসানো হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ জমি দিয়েছে। বুধবার সেই পাম্পের উদ্বোধন হল। পাম্প থেকে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছনোয় মানুষজনও ভীষণ খুশি। অনেকেই বলছেন, ১০বছর ধরে এই সমস্যায় ভুক্তভোগী। শেষমেশ চেয়ারম্যান ও স্থানীয় কাউন্সিলারের হাত ধরে জলসঙ্কট থেকে মুক্তি মিলল।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ২০নম্বর ওয়ার্ডেও পাম্প চালু হয়ে যাবে বলে এদিন চেয়ারম্যান জানান। সেখানেও প্রায় ৫০লক্ষ টাকা ব্যয়ে পাম্প বসানো ও পাইপলাইনের কাজ চলছে। এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে তমলুক পুরসভার চেয়ারম্যান শহরে নদীবাহিত জলপ্রকল্প নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। তিনি বলেন, নদীবাহিত জল প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগচ্ছে। ২০২৬সালের প্রথম দিকে এই জলপ্রকল্প চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন তিনটি ওভারহেড রিজার্ভার হবে। সেইসঙ্গে নতুন করে পাইপলাইন পাতা হবে। পুরসভার ১৬ ও ১৮নম্বর ওয়ার্ডে পাইপলাইন পাতা হয়ে গিয়েছে। বাদবাকি ওয়ার্ডে পাইপলাইনের কাজ হবে। এই প্রকল্প চালু হলে শহরে আগামী ৭০-৮০বছরে জলের সমস্যা হবে না।
৮নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দীপ্তি অধিকারী, শ্রাবন্তী অধিকারী বলেন, তিন-চার বছর ধরে এখানে জলের সমস্যায় ভুগছি। গত দু’বছর ট্যাঙ্কের জলই ভরসা। শেষমেশ পাম্প উদ্বোধন হওয়ায় বুধবার থেকে প্রয়োজনমতো জল পাচ্ছি।-নিজস্ব চিত্র