• আজ লেত উৎসবে রথযাত্রার আনন্দে মাতবে মহিষাদল, লোকসংস্কৃতি উৎসবের আয়োজন
    বর্তমান | ২৬ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: আজ, বৃহস্পতিবার কাঠের রথের নেত্রদান বা চক্ষুদান অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে মহিষাদলের শতাব্দীপ্রাচীন রথযাত্রা। ‘নেত উৎসব’ নামে পরিচিত হয়ে অপভ্রংশ হয়ে মহিষাদলে ‘লেত উৎসব’ হয়ে উঠেছে দীর্ঘকাল। মহিষাদলে মানুষ রথের একদিন আগেই লেত উৎসবের মাধ্যমে মেতে ওঠেন রথযাত্রার অনুষ্ঠানে। মহিষাদল রাজবাড়ি থেকে শালগ্রাম শিলা শ্রীধরজিউকে রথে এনে পুজো করা হয়। এই অনুষ্ঠানে রাজবাড়ির সদস্য ছাড়াও উপস্থিত থাকেন এলাকার বিশিষ্টরা। পুজোর পর ৩০কেজির পিতলের কলসি এবং ১২কেজির চক্র রথের চূড়ায় স্থাপন করা হয়। রথের সর্বোচ্চ চূড়া থেকে একটি কাপড় মাটিতে স্পর্শ করে রাখা হয় রথের পিছন দিকে। রাজবাড়ির আরাধ্য দেবতা গোপালজিউ, জগন্নাথদেব এবং রাজরাজেশ্বর জিউকে শোভাযাত্রা সহকারে এনে রথে স্থাপন করা হয়। কথিত আছে, পুরীর রথ টানা শুরু হলেই মহিষাদলের রথ টানা শুরু হয়। মহিষাদলের কাঠের রথ ২০০বছরের বেশি পুরনো। এত নকশা ও সৌন্দর্যমণ্ডিত রথ কমই রয়েছে, জানিয়েছেন লোক গবেষকরা। এই রথ সচল রাখতে এবং যথাযথ সংরক্ষণের জন্য বিধানসভায় মহিষাদলের রথকে হেরিটেজ ঘোষণার দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী। তিনি বলেন, গতবছর ২১ আগস্ট রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে মহিষাদলের রথকে হেরিটেজ ঘোষণার আবেদন করেছি। হেরিটেজ কমিশনের প্রতিনিধিরা একবার রথ পর্যবেক্ষণ করে গিয়েছেন। বিধায়ক বলেন, মহিষাদলের ১৩ চূড়ার রথকে হেরিটেজ ঘোষণার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনা হয়েছে।

    মহিষাদলের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে লোকসংস্কৃতি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। ২৭জুন থেকে ৫জুলাই পর্যন্ত উৎসব পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলি দাস বলেন, সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা সিসি ক্যামেরার আওতায় এনেছে পুলিস-প্রশাসন। রথের মেলা প্রাঙ্গণে দু’টি জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হচ্ছে। আগুন থেকে সতর্ক করতে প্রত্যেক দোকানদারকে দু’বালতি জল সবসময় মজুত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পকেটমার ও ছিনতাইবাজদের নজরদারিতে এবার স্পেশাল টিম তৈরি থাকবে। বনদপ্তরের নিষিদ্ধ পাখি ও প্রাণী মেলায় বিক্রি করা নিয়ে নজরদারি চালানো হবে। রথ ও উল্টোরথের দিন বেলা ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মহিষাদল শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে সমস্ত ধরনের যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রথের কয়েকদিন গুণ্ডিচাবাটিতে লোকসংস্কৃতি উৎসবে স্থানীয় ও নামী শিল্পীরা থাকছেন। ২৯ জুন গাইবেন অতনু মিশ্র, ২জুলাই গাইবেন গুরুজিৎ সিং, ৪জুলাই অর্থাৎ শেষ দিনে গাইবেন লোকশিল্পী অর্পিতা চক্রবর্তী। ৩০জুন রয়েছে স্বর্ণময়ী অপেরার যাত্রা এবং ৩জুলাই পুরুলিয়ার ছৌ নাচ।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)