সংবাদদাতা, কাটোয়া: রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কাটোয়া মহকুমার ফ্লাড শেল্টারগুলি হানাবাড়িতে পরিণত হয়েছে। যে কোনও সময়ে সেগুলি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। কোথাও আবার ফ্লাড শেল্টার দখল করে রমরমিয়ে চলছে মুদির দোকান। স্থানীয় পঞ্চায়েতে রীতিমতো রসিদ কেটে মাত্র দু› শ টাকায় ফ্লাড শেল্টার ভাড়া দিয়েছে। সেখানে এখন চাল, আলু বিক্রি হয়। প্রশ্ন উঠছে, বন্যা দুর্গতদের জন্য কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে তৈরি করা ফ্লাড শেল্টার যদি প্রয়োজনে মানুষের কাজে না লাগে তাহলে লাভ কী।
কেতুগ্রাম ২ ব্লকের নবগ্রাম পঞ্চায়েত ভবনের উলটো দিকে অনেক বছর আগে তৈরি করা হয়েছে একটি দ্বিতল ফ্লাড শেল্টার। এই এলাকার পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে ভাগীরথী। নবগ্রাম বন্যাপ্রবণ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত। বন্যা হলে স্থানীয় মানুষজন ওই ফ্লাড শেল্টারে আশ্রয় নেন। অভিযোগ, সেই ফ্লাড শেল্টারই ভাড়া দিয়েছে পঞ্চায়েত। সেখানে একটি ঘর তৈরি করে দিনের পর দিন রমরমিয়ে চলছে মুদির দোকান। এক ব্যবসায়ী ওই দোকান ঘরটি ভাড়া নিয়েছেন। ফ্লাড শেল্টারের একতলায় একপাশে কংক্রিটের দেওয়াল তুলে শাটার গেট বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই ওই ব্যবসায়ী আলু, চাল, সরিষার তেল সহ অন্যান্য মুদিদ্রব্য বিক্রি করছেন। ওই ফ্লাড শেল্টারটি বেশ পুরনো। সংস্কারের অভাবে সেটি বেহাল হয়ে পড়েছে। আপাতত সেখানে বালি ঢেলে রাখা হয়েছে।
ব্লকেরই উদ্ধারণপুরে মেলার মাঠেও একটি দ্বিতল ফ্লাড শেল্টার তৈরি করা হয়েছিল। সেটার অবস্থা আরও বেহাল। বাইরে থেকে দেখলেই সেটা হানাবাড়ি মনে হবে। নীচের পিলার দুর্বল হয়েছে। ছাদের চাঙর খসে পড়ছে। উপরের দরজা জানালা উধাও হয়ে গিয়েছে। নোংরা আবর্জনায় ভর্তি। সেখানে এখন বিষধর সাপের আনাগোনা। ভবনটির চারিদিকে ফাটল ধরেছে। যে কোনও মুহূর্তে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে।
কেতুগ্রাম-২ বিডিও শাশ্বতী দাস বলেন, ফ্লাড শেল্টারগুলি সংস্কারের জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে৷ টাকা এলেই সংস্কার হবে। এদিকে মঙ্গলকোটের লাখুরিয়া অঞ্চলের আটঘরা গ্রামে রয়েছে ফ্লাড শেল্টারটিরও বেহাল অবস্থা। নতুনহাট-গুসকরা রাস্তার উপরেই অবস্থিত ভবনটির ছাদের চাঙর খসে পড়ছে। দ্বিতলের উপরে আগাছা জন্মেছে। বৃষ্টির জল ছাদ দিয়ে চুঁইয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা বিনু মাঝি, কার্তিক মাঝি, সপ্তম মাঝি বলেন, বহু বছর আগে ওই ফ্লাড শেল্টারটি তৈরি করা হয়েছিল। গ্রামের পাশ দিয়ে অজয় নদ বয়ে গিয়েছে। বর্ষায় জল বাড়লেই আমাদের এলাকা প্লাবিত হয়। তখন ছেলেপুলের হাত ধরে ঘর ছাড়তে হয়। কিন্তু ফ্লাড শেল্টার বেহাল। প্রশাসন সংস্কার করলে আমাদের উপকার হয়৷ মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী বলেন, ওই ফ্লাড শেল্টারটি সংস্কারের জন্য বলা হয়েছে। আশাকরছি দ্রুত মেরামত করা হবে। নবগ্রামের ফ্লাডশেল্টার বেহাল।-নিজস্ব চিত্র