পুজোর আগে তাঁতশিল্পীদের মুখে হাসি চায় রাজ্য ১০ কোটি টাকার শাড়ি কিনবে তন্তুজ
বর্তমান | ২৬ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: কাশফুল, নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা, আর তাঁতের খটখট শব্দের মধ্যেই যেন আগমনীর সুর শোনা যায়। খাদি, তাঁতের সঙ্গে বাঙালির সম্পর্ক রয়েছে সেই স্বাধীনতা আন্দোলনের আগে থেকে। তবে মাঝে কয়েক বছর পুজোর আগে তাঁতের সেই খটখট আওয়াজের তীব্রতা যেন কমে গিয়েছিল। তাঁত বোনা ছেড়ে দিয়ে অনেকেই অন্য পেশায় চলে গিয়েছিলেন। রাজ্য সরকার আবার তাঁতের সেই হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি ফিরিয়ে আনতে চাইছে। পুজোর আগে ১০ কোটি টাকার সিল্ক এবং তাঁতের শাড়ি কিনবে রাজ্য সরকার। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করে তাঁতশিল্পীদের কাছ থেকে শাড়ি কেনা হবে। তন্তুজ আউটলেটগুলিতে সেগুলি বিক্রি করা হবে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৬৪টি আউটলেট রয়েছে। সেগুলিতে বিভিন্ন দামের কাপড় পাওয়া যাবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া এবং বীরভূম থেকে এক কোটি টাকার সিল্কের শাড়ি কেনা হবে। বিভিন্ন জেলার ক্লাস্টারগুলি থেকে ছ’কোটি টাকার কাপড় দপ্তর কিনবে। ক্যাম্প করে ব্যক্তিগতভাবে তাঁত শিল্পীদের কাছ থেকে এক কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের কাপড় কেনা হবে। বর্ধমান শহরেও তন্তুজর শোরুম তৈরি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোরুমটি পুজোর আগেই উদ্বোধন করবেন বলে ঠিক হয়ে রয়েছে। সেইভাবে সেটি সাজিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিতেও বিভিন্ন দামের কাপড় মজুত করা হবে। ক্রেতাদের চাহিদা মতো কাপড় তৈরির জন্য বলা হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, পূর্ব বর্ধমান জেলায় বহু তাঁতশিল্পী রয়েছেন। তাঁরা সারা বছরই কাপড় বোনেন। পুজোর আগে কাজের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। রাজ্য সরকার তাঁদের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প এনেছে। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সমুদ্রগড়, পূর্বস্থলী বা নাদনঘাট এলাকার বহু পরিবার এই পেশার উপর নির্ভরশীল। নাদনঘাট এলাকার তাঁতশিল্পী প্রণব বিশ্বাস বলেন, এখন বিভিন্ন ধরনের কম দামের কাপড় বাজারে চলে এসেছে। তাঁতের কাপড়ের চাহিদা আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। তবে রাজ্য সরকার এভাবে সহযোগিতা করলে আবার এই শিল্পে জোয়ার আসবে। কেউই পূর্বপুরুষের পেশা ছাড়তে চায় না।পূর্ব বর্ধমানের তাঁতের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের সিল্কের শাড়ির কদর রয়েছে। বীরভূমের বিষ্ণুপুর এলাকারও বহু পরিবার তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। ওই এলাকার বহু পরিবারও এই পেশার প্রতি উৎসাহ হারায়। পুজোর আগে সরকার সরাসরি শাড়ি কিনলে আবার অনেকেই তাঁত বোনার প্রতি উৎসাহ দেখাবেন বলে আধিকারিকরা মনে করছেন। সরকার কাপড় কেনার কথা ঘোষণা করায় এখন থেকেই বোনা শুরু হয়েছে। ফাইল চিত্র