বালিয়াডাঙা ও শঙ্খনগরের শাঁখা ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবসার আশায়
বর্তমান | ২৬ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, করিমপুর: মুরুটিয়ার বালিয়াডাঙা ও শঙ্খনগর গ্রামের শঙ্খ ও শাঁখার কদর বিস্তৃত অসম ও ত্রিপুরাতেও। দুর্গাপুজোর আর মাস তিনেক বাকি। পুজোতে পড়শি রাজ্যের মহিলাদের চাহিদা পূরণে চরম ব্যস্ততা চলছে ওই দুই গ্রামে। প্রতি বছরের মতোএবারও পুজোতে ভালো ব্যবসার আশা করছেন শাঁখা ব্যবসায়ীরা। কারিগররা জানান, প্রতি বছর দুর্গাপুজো ও ধনতেরসের সময়ে শঙ্খ ও শাঁখার বিক্রিসবচেয়ে বেশি হয়। তাই তার আগেই সব মাল তৈরি করে পৌঁছনোর দায়িত্ব রয়েছে। এলাকারব্যবসায়ী অরূপ পাল বলেন, ২০১৬ সালে নোটবন্দি ও ২০২০ সালে করোনার কারণেব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ব্যবসায়ী ও কারিগর সবাইকে হাত গুটিয়ে বসেথাকতে হয়েছিল। খুব খারাপ সময় গিয়েছে। তারপরেও কয়েক বছর ব্যবসা ভালো যায়নি।তবে পুজোর আগে প্রতিবছর কাজের চাপ বাড়ে। এবছর ভালো ব্যবসার আশা রয়েছে। শাঁখার কারিগর ভক্তদাসবৈরাগ্য, বংশীবদন পাল বলেন, বালিয়াডাঙা ও শঙ্খনগর দু’টি গ্রামে প্রায় একশো ব্যবসায়ী ও আটশো কারিগর প্রতিদিন শঙ্খ ও শাঁখা কাটার কাজ করেন। সবমিলিয়ে গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবারের রুজিরুটির ভরসা একমাত্র এই ব্যবসা।এবছর কাঁচামালের জোগান যেমন কম, তেমনি দামও বেশি। আবার তৈরি মালের চাহিদাওকমে গিয়েছে। ফলে এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সকলেই খুব চিন্তায়। তবে পুজোপর্যন্ত বাজারে সোনার দাম কম থাকলে শাঁখার ব্যবসা ভালো হবে। ওই ব্যবসায়ীআরও জানান, প্রায় একশো বছর আগে ঠাকুরদার সময় থেকে এখানে শাঁখা তৈরির কাজহয়। বর্তমানে আমার কারখানায় বারো জন কারিগর বছরভর কাজ করেন। আরেকব্যবসায়ী শ্যামদাস বৈরাগ্য বলেন, অনেক আগে থেকে আমাদের কাঁচামাল সরাসরিশ্রীলঙ্কা বা চেন্নাই থেকে আসত। তাতে কম দামে ভাল মানের শঙ্খ পাওয়া যেত। কিন্তুগত বছর থেকে শ্রীলঙ্কার পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে চেন্নাইয়ের শঙ্খ নিতে হয়। ফলে কাঁচামালের দাম অনেক বেশি পড়ে যায়। এখানেতৈরি শাঁখা ও শঙ্খ কলকাতা, হুগলি, মালদহ, উত্তরবঙ্গ ছাড়াও ভিন রাজ্যেযায়। সবচেয়ে বেশি মাল যায়অসম ও ত্রিপুরায়। স্থানীয় কারিগরপ্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, গ্রামের মানুষের সবাই শাঁখার কাজে যুক্ত। এবছর মালেরচাহিদা কিছুটা কম। তবে কয়েক দিনের মধ্যে হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। তাই পুজোরতিন মাস আগে জোরকদমে কাজ চলছে প্রতিটি কারখানায়।