নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পুর-বাজারগুলিতে উন্নয়ন এবং পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপণ পরিকাঠামো তৈরি করতে বদ্ধপরিকর কলকাতা পুরসভা। তার জন্য দমকলকে বিভিন্ন বাজারের ‘ফায়ার অডিট’ করতে বলেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেই সঙ্গে বেসরকারি বাজার নিয়েও চিন্তিত মেয়র। তাই বিশেষ কোনও ছাড় দিয়ে বা অন্য কোনও উপায়ে সরকারি সহযোগিতার মাধ্যমে বেসরকারি বাজারগুলির হাল ফেরানোর ব্যবস্থা করা যায় কি না, চিন্তাভাবনা শুরু করেছে পুরসভা। এই কাজে স্থানীয় কাউন্সিলারদের সক্রিয় হতে বলেছেন মেয়র।
বুধবার কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে তৃণমূল কাউন্সিলার বিশ্বরূপ দে, মোনালিসা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপির সজল ঘোষ, বিজয় ওঝা প্রমুখ শহরের বিভিন্ন বাজারের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। শিয়ালদহ শিশির মার্কেট, কোলে মার্কেট, বৈঠকখানা মার্কেটের অগ্নিসুরক্ষা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন ওই এলাকার কাউন্সিলার মোনালিসাদেবী। বউবাজারের লেবুতলা ও বউবাজার মার্কেট নিয়ে একই প্রশ্ন তোলেন বিশ্বরূপবাবু। শহরের বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকাণ্ড ঘটলে পর্যাপ্ত জলের জোগানের জন্য গঙ্গার জলের কল তৈরি করা যায় কি না, জানতে চান সজলবাবু। ফিরহাদ বলেন, ‘কলকাতার অনেক বাজারই চিন্তার কারণ। শহরের মধ্যে একাধিক বাজার অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। পুরনো বেশ কিছু বাজারের ভিতরে রাস্তা খুবই সরু। সেই সময় হয়তো ঠিক ছিল। কিন্তু আজ বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দমকলকে বলা হয়েছে, সমস্ত বাজারের ফায়ার অডিট করে ঠিক করতে হবে, আগুন লাগলে কোন দিক দিয়ে ঢুকবে দমকলের গাড়ি। দমকল থেকে যে নির্দেশ আসবে, পুরসভা সেই মতো কাজ করবে। কোথায় স্থায়ী পাম্পিং স্টেশন তৈরি করতে হবে, কোথায় ডিপ টিউবওয়েল, কোথায় রিজার্ভার—সবটাই তারা খতিয়ে দেখবে।’
সেই সঙ্গে পুরসভার চিন্তা বেড়েছে বেসরকারি বা ব্যক্তিগত মালিকানার বাজারগুলি নিয়ে। মেয়র বলেন, ‘ব্যক্তি মালিকানাধীন বাজারের কর্তৃপক্ষকে আমরা অনুরোধ করেছি সংস্কার ও প্রয়োজনীয় অগ্নি নির্বাপণ পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য। কিন্তু, কোথাও শরিকি ঝামেলা, কোথাও ভাড়াটে সরানো নিয়ে সমস্যা—এরকম নানা কারণে সংস্কার করা যাচ্ছে না। সম্প্রতি যদুবাবুর বাজার নিয়েও এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে পুরসভাকে।’ এই অবস্থায় পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, বেসরকারি বাজারে পুরসভা টাকা খরচ করতে পারে না। তবে পুরসভা বিল্ডিং নির্মাণের অনুমোদনে ছাড় দিতে পারে, যাতে মার্কেট কমপ্লেক্স নতুন করে তৈরি করে সেখানে ব্যবসার ক্ষেত্র আরও প্রশস্ত করা যায়। এক্ষেত্রে স্থানীয় কাউন্সিলারদের বৃহত্তর নিরাপত্তার স্বার্থে মালিকদের সঙ্গে কথা বলার উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানান মেয়র।