এই সময়, নামখানা: সরকারি নথিতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে দু’টি ভবন ও একটি কংক্রিট রাস্তা তৈরিতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দু’টি ভবনের কোনও অস্তিত্বই নেই। রাস্তা তৈরি হলেও খরচের হিসেবেও ব্যাপক গরমিল।
জানা গিয়েছে ভবন তৈরির ঠিকাদার ও তাঁর স্ত্রী একশো দিনের জবকার্ড হোল্ডার। সেই জবকার্ডে মজুরিও তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে নামখানা ব্লকে এরকম গুচ্ছ গুচ্ছ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব স্থানীয় বাসিন্দা থেকে বিরোধীরা।
বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার জেলা কমিটির সদস্য শিবপ্রসাদ প্রামাণিক বলেন, ‘এ জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বরাদ্দ বন্ধ করে ছিল। আবার চালু হলে এ ভাবেই চুরি করবে। এই দুর্নীতিতে প্রশাসন থেকে শাসকদলের নেতা সকলেই জড়িত।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় দু’বছর কেটে গেলেও প্রশাসন তদন্তে নামতে চাইছে না।
কেন্দ্রীয় সরকারের পোর্টাল থেকে জানা যাচ্ছে, ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে নামখানা বিডিও অফিস চত্বরে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের জন্য একটি ভবন, খাদ্যশস্য সংরক্ষণের জন্য একটি স্টোরেজ ও একটি কংক্রিটের রাস্তা তৈরিতে সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার বেশি টাকা খরচ হয়েছে।
যদিও খাতায় কলমে কাজ হলেও বাস্তবে তার অস্তিত্ব নেই। এই অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় বাসিন্দা স্নেহাশিস গিরি। কিন্তু আজও তদন্তের কিছুই হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ।
নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির তৎকালীন সভাপতি কল্পনা মালি মণ্ডল জানিয়েছেন, এ রকম কোনও প্রকল্প বিডিও অফিস চত্বরে হয়েছে বলে তাঁর জানা নেই।
পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা অভিষেক দাস বলেন, ‘এ রকম কাজ বিডিও অফিস চত্বরে হয়েছে কি না তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার জেরে বাংলায় কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। হয়তো এই দুর্নীতি গুজরাটে হতে পারে!’
ঠিকাদার অশোক মালি বলেন, ‘জব কার্ডের বিষয়ে জানা নেই। তবে কাজ করার পর এখনও পর্যন্ত টাকা পাইনি।’
নামখানার বিডিও অমিত সাউ জানিয়েছেন, ‘অভিযোগ হয়ে থাকলে তদন্ত হবে। তিন বছর আগের ঘটনা। বিষয়টি কী খতিয়ে দেখতে হবে।’