এই সময়, ঘাটাল: জলে ভেসে গিয়েছে তিলের গাদা, ডুবেছে পাট গাছ। ফসল তোলার মতো অবস্থা হয়েছিল, তাও জলের তলায়। বিঘার পর বিঘা খেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান চাষিরা।
ঘাটাল ও চন্দ্রকোণার চাষিদের এখন চোখে জল। সরকার যদি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা না করে, তা হলে কী ভাবে ঋণ শোধ করবেন চাষিরা, তা নিয়েই চিন্তায় তাঁরা।
টানা বৃষ্টি ও নদীতে জল বাড়ায় জলমগ্ন হয়েছিল ঘাটাল মহকুমার বেশির ভাগ এলাকা। একই সঙ্গে নদীতে হড়পা বান আসায় ঘাটালের পাশাপাশি চন্দ্রকোণাও ডুবেছিল। এলাকার রাস্তাঘাট, বিদ্যুতের সমস্যা তো চলছেই। এমনকী নেই পানীয় জলও।
এলাকার বেশির ভাগ মানুষের ঠাঁই হয়েছে ত্রিপলের নীচে। চন্দ্রকোণা–১ ব্লকের শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হয় এলাকা। আবার কামারগেড়িয়ার কেঠিয়াখালের বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হয় মনোহরপুর–১ এবং মনোহরপুর–২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকা। প্রায় ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
চন্দ্রকোণার এক কৃষক চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, ‘সরকার যদি পাশে না থাকে, আমাদের বেঁচে থাকা আর হবে না। এমনিতেই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করতে হয়। তার মধ্যে গ্রামে জল ঢোকায় সব নষ্ট। আমরা কী খাব, তাই জানি না। ঋণ মেটানো তো অনেক দূরের কথা।’
ঘাটালের রামচন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা স্বপন গায়েন এবং তাঁর স্ত্রী ছন্দা গায়েন বলেন, ‘আমার প্রায় দেড় বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছিলাম। এ বছর বর্ষার শুরুতেই সব শেষ হয়ে গেল। এমনকী সব ফসল পচে গিয়েছে।’
আরও এক কৃষক স্বপন বলেন, ‘ঠিক সময়ে সরকারি ক্ষতিপূরণ পাব তো? সরকার বলে ক্ষতিপূরণ দেবে, কিন্তু তা আর পাই না। তিন বছর আগে ঘাটালে জলভাসিদের জন্য ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি মিলেছিল। আমরা আবেদন করেও সেই ক্ষতিপূরণ পাইনি।’
তবে যথাসময়ে ক্ষতিপূরণ পাবেন বলে জানিয়েছেন চন্দ্রকোণার বিধায়ক অরূপ ধাড়া। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। আবেদন করলেই সময়মতো চাষিরা ক্ষতিপূরণ পাবেন।’
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে মহকুমাশাসকের দপ্তরে বুধবার বৈঠক করতে এসেছিলেন সেচমন্ত্রী মানসরঞ্জন ভুঁইয়া। তিনি বলেন, ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সার্বিক উন্নয়ন হবে। কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের ন্যায্য দাম পাবেন।’