বছর চারেক আগে কন্যাসন্তান হওয়ায় স্ত্রী-সন্তানকে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে গিয়েছিলেন যুবক। বালুরঘাটের ওই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল তামাম বঙ্গবাসীকে। এখনও কন্যাসন্তান হলে পরিবারের লোকজনের মুখভার হওয়া সাধারণ ব্যাপার। তবে তার ঠিক উল্টো ছবি দেখা গেল দিনহাটায়। গাড়ি ফুল-বেলুনে সাজিয়ে সদ্যোজাত মেয়েকে ঘরে নিয়ে গেলেন বাবা। গর্বিত বাবা জানিয়ে দিলেন, কন্যাসন্তান তাঁর কাছে আশীর্বাদ।
প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে দিন দুই আগে দিনহাটা ১ ব্লকের ওকড়াবাড়ি গ্রামের জাহাঙ্গির আলমের স্ত্রী হালিমা খাতুন দিনহাটা হাসাপাতালে ভর্তি হন। ওই দিনই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। দম্পতি মনেপ্রাণে চাইছিলেন তাঁদের যেন একটি মেয়ে হয়। তা হওয়ায় আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন তাঁরা। মা ও সন্তান দু’জনেই সুস্থ থাকায় চিকিৎসক ছুটি দিয়ে দেন। বুধবার দেখা যায় হাসাপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে ফুল ও বেলুন দিয়ে সাজানো গাড়ি। সেই গাড়িতে চড়ে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন মা।
জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘‘কন্যাসন্তান আমার কাছে আশীর্বাদ। মেয়ে হওয়ায় কী যে আনন্দ হচ্ছে বলে বোঝাতে পারব না। সেই আনন্দে ফুল-বেলুনে গাড়ি সাজিয়ে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে গেলাম।’’
কন্যাসন্তান হওয়ায় একই ভাবে কয়েকটি গাড়ি সাজিয়ে নার্সিংহোম থেকে সদ্যোজাতকে বাড়ি এনেছিলেন মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির রতনপুরের বাসিন্দা দম্পতি ইউসুফ হাসান, রূপসা পারভিন। সেই ঘটনা সমাজমাধ্যমে সুনাম কুড়িয়েছিল। সেই ঘটনার সপ্তাহ না যেতেই কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ার আনন্দে সদ্যোজাতকে বহরমপুরের এক বেসরকারি হাসপাতাল থেকে সাজানো গাড়ি করে বাড়ি নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। ফুল, মালা, বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছিল বাড়িও। যা হইচই ফেলে।
মনোবিদদের কেউ কেউ জানান, বর্তমান সমাজে মেয়েদের আজও দূরে সরিয়ে রাখা হয়। বাড়িতে মেয়ের চেয়ে ছেলের কদর বেশি, যত্ন বেশি। অনেক সময়ে পর পর মেয়ে হলে গঞ্জনা শুনতে হয় মাকে। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই ধরনের ঘটনা মানুষকে ভাবাতে বাধ্য করবে।