• সেতুবন্ধনে প্রযুক্তি, উদ্যোগী পঞ্চায়েত
    আনন্দবাজার | ২৬ জুন ২০২৫
  • দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের মহাপ্রসাদ বিলি হচ্ছে। রেশন ডিলাররা পাড়ায় পাড়ায় সেই প্রসাদ বিলি করছেন। কিন্তু পঞ্চায়েতের কর্তাদের নজরে এসেছে, প্রতিদিন যে লক্ষ্যমাত্রায় প্রসাদ বিলি করার কথা, তা পূরণ হচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, কবে-কোথায়-কোন সময় মহাপ্রসাদ বিলি করা হচ্ছে, সেই প্রচার ঠিক মতো সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে না।

    বুধবার মেমারির দলুইবাজার ১ পঞ্চায়েতের সদস্যেরা বৈঠকে ঠিক করেন, এখন প্রতিটি পরিবারের কাছেই অ্যান্ড্রয়েড ফোন রয়েছে। প্রত্যেকেই ওয়টস্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। সমাজমাধ্যমকে ব্যবহার করে সরাসরি পঞ্চায়েতের বক্তব্য সাধারণ মানুষকে জানানোর সুযোগ রয়েছে। তারই উপযুক্ত ব্যবহারের জন্য পঞ্চায়েতের সদস্যেরা মত দেন। এ দিনই ওয়টস্যাপ চ্যানেলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পঞ্চায়েতের বক্তব্য জানাতে শুরু করে দিয়েছেন কর্তারা। যার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘তথ্যসমৃদ্ধি: নিজের পঞ্চায়েতকে আরও কাছে।’

    পঞ্চায়েতের দাবি, দিঘার জগন্নাথ প্রসাদ বিলি থেকে ভোটার কার্ড তৈরি, জাতিগত শংসাপত্রের শিবির থেকে দুয়ারে রেশন কিংবা নানা রকমের শংসাপত্র দেওয়ারও শিবির, কর আদায়ের শিবির, জল পৌঁছনো সংক্রান্ত কোনও খবরের জন্য ঢেঁড়া পেটানো, টোটোয় মাইক বেঁধে গ্রামে প্রচার করার চল রয়েছে।

    পঞ্চায়েতের কর্তারা জানান, দিঘার মহাপ্রসাদ বিলি করতে গিয়ে বোঝা গেল, বাসিন্দারা ওই প্রচারে কান দেন না। আর টোটো চালকেরাও এক জায়গাতে দাঁড়িয়ে প্রচার করেন না। ফলে, অর্ধেক লোক শোনে। বাকিরা শুনতে পান না। যাঁরা শোনেন, তাঁরাও আবার কী জন্য প্রচার, তা বুঝতে পারেন না। পঞ্চায়েতের সদস্যেরাও সে ভাবে কোনও কর্মসূচি নিয়ে প্রচারে আগ্রহ দেখান না। ফলে, পঞ্চায়েতের সঙ্গে বাসিন্দাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়ে যাচ্ছে।

    পঞ্চায়েত ঠিক করেছে, তাদের মাধ্যমে যে সব কর্মসূচি রূপায়িত হবে, সে সব কর্মসূচি ওয়টস্যাপের মাধ্যমে জানানো হবে। তবে এলাকাবাসীকে একটি নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। তার জন্য ভোটার কার্ড, সংসদের নম্বর ও নিজের ছবি পঞ্চায়েতকে দিতে হবে তাঁদের। পঞ্চায়েত শুধু তথ্য জানাবে না, পরবর্তী সময়ে বাসিন্দাদের নানা প্রশ্নের জবাবও দেওয়া হবে। পঞ্চায়েত সংক্রান্ত কোনও অসুবিধা বা কোনও অভিযোগ থাকলে তা-ও জানাতে পারবেন বাসিন্দারা।

    মেমারির দলুইবাজার ১ পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের গোপাল দাস বলেন, “বোঝা যাচ্ছে গ্রামের মানুষের কাছে সব বিজ্ঞপ্তি বা তথ্য যেত না। তবে আমাদের তরফে মাইক প্রচার করতে হত। সেগুলি এ বার থেকে সরাসরি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। এর ফলে, পঞ্চায়েত সাধারণ মানুষের আরও কাছে, দুয়ারে পৌঁছে যাবে।”

    জেলা পরিষদের ভূমি কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল ব্লক সভাপতি (মেমারি ১) নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার মনে হয়, জেলায় এ রকম কর্মসূচি প্রথম হচ্ছে। সে কারণে দলুইবাজার ১ পঞ্চায়েতের এই উদ্যোগকে মডেল করে আমাদের ব্লকের সব পঞ্চায়েতে ও পঞ্চায়েত সমিতিকেও এই কর্মসূচি নেওয়ার অনুরোধ করব।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)