• মুখ্যমন্ত্রী মমতার হস্তক্ষেপে রাজস্থানে মুক্তি পেয়ে কাজে ফিরলেন বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকরা, স্বস্তি ফিরল ইটাহারে
    আনন্দবাজার | ২৬ জুন ২০২৫
  • মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত মুক্তি পেলেন রাজস্থানে আটক হওয়া বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকেরা। বুধবার সকালে রাজস্থান থেকে এ কথা জানিয়েছেন মঙ্গলবার আটক হওয়া এক পরিযায়ী শ্রমিক। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসমের বাংলাভাষী শ্রমিকদেরও আটক করা হয়েছিল। অভিযোগ, ভারতীয় নাগরিকত্বের যাবতীয় প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও, ওই শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলে আটক করা হয়। মঙ্গলবার ছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধিবেশনের শেষ দিন। ওই দিন অধিবেশনে যোগ দিতে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় এসেছিলেন। অধিবেশনের বিরতির সময় ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক মোশাররফ হোসেন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে যান। সেখানে গিয়ে তাঁকে বিজেপি শাসিত রাজ্য রাজস্থানে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক হওয়ার বিষয়টি জানান। ক্ষোভে ফেটে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী।

    মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে দ্রুত নিজের ঘরে ডেকে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তাঁকে নির্দেশ দেন, রাজস্থানে আটক হওয়া বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ছাড়ানোর জন্য অবিলম্বে রাজস্থানের মুখ্যসচিব সুধাংশু পন্থের সঙ্গে কথা বলতে। বুধবার সকালে রাজস্থান থেকে পরিযায়ী শ্রমিক আইনুল হক বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের তরফে রাজস্থান সরকারের সঙ্গে কথা বলার পরেই মঙ্গলবার বিকেলে আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বুধবার সকালে আমরা সবাই নিজের নিজের কাজে যোগ দিতে পেরেছি। এই কারণে আমরা সবাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাই।’’ আপাতত তাদের পশ্চিমবঙ্গে ফিরে আসার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছেন ওই পরিযায়ী শ্রমিক। তবে ইটাহারে থাকা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা। ওই পরিযায়ী শ্রমিক জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের ২০০ জন শ্রমিকের সঙ্গে ছিলেন অসমের প্রায় ২০০ জন বাংলাভাষী শ্রমিক। তাঁদেরও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

    প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাজস্থানে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টি জানেন কি না, জানি না। কিন্তু তাঁর দলের সরকার এই কাজ করছে।’’ পাশাপাশি বিজেপিকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছিলেন, ‘‘এ বার রাজস্থানে এই ঘটনা ঘটেছে। এ রাজ্যের ৩০০ মানুষকে বাংলাদেশি চিহ্নিত করে একটি জায়গায় আটকে রাখা হয়েছে। এটা চলতে পারে না!’’ এই ঘটনার জন্য বিজেপি শাসিত রাজস্থান সরকারকে দায়ী করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘বাংলায় কথা বলা কি অপরাধ?’’

    এ রাজ্যেও বিভিন্ন রাজ্য থেকে যে শ্রমিক আসেন, সে কথা মনে করিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিন্তু এই রকম আচরণ করি না। নাগরিক হিসেবে সব প্রমাণপত্র থাকা সত্ত্বেও এ রাজ্য থেকে কাজে যাওয়া মানুষকে হেনস্থা করা হচ্ছে।’’

    বিধানসভায় বিজেপির পরিষদীয় দলের সচেতক শঙ্কর ঘোষ অবশ্য পাল্টা বলেছেন, ‘‘বাঙালিদের এই বিড়ম্বনার দায় তৃণমূলের। রাজ্যে তৃণমূল সরকার যে ভাবে অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিয়েছে এবং ভুয়ো নথি তৈরি নিয়ে শাসকদলের জনপ্রতিনিধিরা যে ভাবে ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন, তাতে বাঙালিকে রাজ্যের বাইরে গিয়ে বিপদে পড়তে হচ্ছে। তৃণমূল ভোট ব্যাঙ্কের স্বার্থে বাঙালিকে বিপদে ফেলছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)