ভঙ্গুর বাড়ি থেকে শুরু করে জীর্ণ বাজার,কোথায় হাত পা বাঁধা, জানালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম
আনন্দবাজার | ২৬ জুন ২০২৫
কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দিকে কলকাতা শহরের জরাজীর্ণ বাড়ি এবং বেহাল বাজার সংস্কার নিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন কাউন্সিলরেরা। গত কয়েক মাসে অগ্নিকাণ্ডের জেরে জেরবার হওয়ার ঘটনার কথা তুলেও সরব হন তাঁরা। আর সেই সব প্রশ্নের জবাবে কোন কোন ক্ষেত্রে পুরসভার হাত পা বাঁধা তা উল্লেখ করলেন মেয়র।
৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে প্রশ্ন তোলেন কলকাতার জরাজীর্ণ বাড়ি নিয়ে পুরসভার চিন্তা ভাবনা কী? এই সব ক্ষেত্রে কি আইনত পদেক্ষপ করা সম্ভব? তিনিই আবার বৌবাজার মার্কেট, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের নেবুতলার বাজারের ভগ্নপ্রায় দশা কথা উল্লেখ করে মেয়রের হস্তক্ষেপের চান। সঙ্গে ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মোনালিসা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার তাঁর ওয়ার্ডে থাকা শিয়ালদহ রেল স্টেশন সংলগ্ন বিদ্যাপতি সেতুর নীচের শিশির মার্কেট এবং বৈঠকখানার খুচরো বাজারের বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানিয়ে সংস্কারের দাবিতে সরব হন।
জবাবে মেয়র বলেন, ‘‘কলকাতার অনেক বাজারই এখন চিন্তার কারণ। শহরের মধ্যে অনেকটা জায়গা আনপ্লানড সিটির মতো গড়ে উঠেছে। মধ্য কলকাতা ও পুরনো কলকাতার বেশ কিছু বাজার আছে যেখানে রাস্তাগুলো খুব সরু। সেই সময়ে হয়তো ঠিক ছিল কিন্তু আজ খুব সমস্যার কারণ। সরকারি বা পুরসভার বাজার হলে আমরা সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারি। কিন্তু বেসরকারি বা মালিকানাধীন বাজার হলে আমরা সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারি না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সম্প্রতি ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অসীম বসু যদুবাজারের মালিক কর্তৃপক্ষকে আমাদের কাছে এনেছিলেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলেই আমরা বাজার সংস্কারের কাজে হাত দেব। যদি কোনও বেসরকারি বাজারের মালিক আমাদের কাছে প্রস্তাব নিয়ে এগিয়ে আসেন তা হলে আমরা সেই বাজার সংস্কারের কাজে হাত দিতে পারি।’’
জীর্ণ বাড়ি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মেয়র বলেন, ‘‘কোনও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বাড়ি আমরা সরাসরি ভাঙতে পারি না। যদি বাড়িটির খুব খারাপ অবস্থা হয়, সে ক্ষেত্রে আমরা ওই বাড়িটিকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করে প্লেট লাগিয়ে দিয়ে আসতে পারি।’’ এ প্রসঙ্গে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘বহু ক্ষেত্রেই আমরা দেখি বিপজ্জনক বাড়ি হওয়া সত্ত্বেও সেখানে মানুষ বাস করছেন। তাদের ওই বাড়ি ছাড়তে বললে আমাদের সমপরিমাণ বিকল্প জায়গা দেওয়ার কথা বলা হয়। যা পুরসভার পক্ষে সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে ওই স্থানের বাসিন্দাদের শংসাপত্র দিয়ে পুরসভা তাদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে পারে।’’
শহরে ঘনঘন আগুন লেগে যাওয়ার ঘটনায় ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ প্রস্তাব দেন, প্রয়োজনে গঙ্গা থেকে জল তুলে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রাথমিক ভাবে অগ্নিকাণ্ডের মোকাবিলা করার বন্দোবস্ত করা হোক। জবাবে মেয়র ফিরহাদ বলেন, ‘‘হাউসে সজল ঘোষ একটা প্রস্তাব দিয়েছিল সেটা সম্ভব নয়। গঙ্গাজল আগে রাস্তার ধারে করত অনেকে স্নান করতো কিন্তু পলি জমে যায়। জল সরবরাহের পাইপ লাইনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাস্তাগুলো নোংরা হয়। পলিমাটি পাইপে জমা হয়। এই পলিমাটি পরিষ্কার করতে গেলে আমাদের রাস্তাগুলোকে কাটতে হচ্ছে। সেই জন্যই গঙ্গা জলের প্রস্তাবটা সম্ভব নয়।’’