এই সময়: থানার অদূরে ফুটপাথে একটি নির্মাণ ঘিরে কিছুদিন আগেই উত্তপ্ত হয়েছিল দক্ষিণ শহরতলির মহেশতলা। স্থানীয় রবীন্দ্রনগর থানা এবং কলকাতা পুলিশ মিলিত ভাবে সেই দিনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে সেই গোলমাল এবং তা নিয়ে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ক’দিন পরে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। দিন কয়েক আগে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও মহেশতলায় গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন।
মহেশতলা-রবীন্দ্রনগরের এই এলাকাটি পড়ে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের আওতায়। সেখানে শুভেন্দু-সুকান্তদের নেতৃত্বে বিজেপি ‘লাশের রাজনীতি’ করতে চেয়েছিল বলে দাবি করলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
মহেশতলার সাম্প্রতিক অশান্তি নিয়ে তৃণমূল ও রাজ্য সরকারের তুমুল সমালোচনা করেছেন শুভেন্দু–সুকান্তরা। এই আবহে স্থানীয় সাংসদ হিসেবে প্রথমবার মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাতগাছিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে এ দিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিজেপি নেতৃত্বের উদ্দেশে বলেন, ‘খুব তো চেষ্টা করেছিলেন ডায়মন্ড হারবারকে কলুষিত করতে। একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপি নেতাদের কী উৎসাহ!
লাশের রাজনীতি করবে! মৃতদেহ খুঁজতে চলে এলেন মহেশতলার রবীন্দ্রনগরে। তারপরে মহিলারা এমন তাড়া করেছেন যে, এখন আশার আগে দশবার ভাববে। সাধারণ মানুষের তাড়া খয়েছে!’
অভিষেকের সমালোচনার মুখে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ‘বিজেপি লাশের রাজনীতি করে না, তৃণমূল তোষণের রাজনীতি করে। এই রাজনীতির কারণেই ওখানে পুলিশ মার খেয়েছে। অগ্নিসংযোগ হয়েছে।’
মহেশতলায় বিক্ষোভের মুখে পড়ে সুকান্ত তৃণমূলকে পাল্টা নিশানা করেছিলেন। সুকান্তর সেই আগ্রাসী ভাষণ নিয়ে অভিষেক এ দিন বলেন, ‘মুখের ভাষা কী! সাধারণ মানুষ যদি এঁদের গদ্দার, মিরজ়াফর, চোর, চিটিংবাজ বলে, এর দায় কি তৃণমূলের? না আমার? (সুকান্ত) তাঁদের (বিক্ষোভকারী) বাবা পর্যন্ত তুলেছেন! তিনি আবার পেশায় শিক্ষক!’
মহেশতলার ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন সুকান্ত। বিজেপির রাজ্য সভাপতি মহেশতলার ঘটনা নিয়ে যে দ্রুততার সঙ্গে কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক।
ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের কথায়, ‘সুকান্ত মজুমদারকে কেন বজবজে আটকানো হয়েছে? তিন ঘণ্টার মধ্যে দুটো চিঠি পাঠিয়ে দিলেন! একটা পাঠালেন লোকসভার স্পিকার, আর একটা পাঠালেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে!
আচ্ছা, পাঁচ বছর ধরে রাজ্যের গরিব মানুষের টাকা বন্ধ রয়েছে। ক’টা চিঠি পাঠিয়েছেন? আপনাকে মানুষ চোর বলছে, আপনি দিল্লিতে আপনার পিতামহকে চিঠি পাঠাচ্ছেন! একশো দিনের প্রকল্প, আবাসের টাকা বন্ধ— এ সবের জন্য একটা চিঠি পাঠিয়েছেন, ছ’বছরের সাংসদ (সুকান্ত) দেখাতে পারবেন না।’