স্টাফ রিপোর্টার: ‘পাষাণ হৃদয় কেটে/ খোদিনু নিজের হাতে/ আর কি মুছিবে লেখা/ অশ্রুবারিধারাপাতে?’
হৃদয় আকৃতির একখণ্ড পীতবর্ণ কোয়ার্টজ পাথর কুঁদে লেখা চার পঙ্ক্তির এই কবিতা লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। অধুনা কর্নাটকের সৈকতনগরী কারওয়ারের চন্দ্রালোকিত সাগরবেলায় বসে মনের বিষাদকে লেখার রূপ দিয়েছিলেন। জনশ্রুতি, তাঁর প্রিয় কাদম্বরী বউঠানকে উদ্দেশ্য করে এই চার পঙ্ক্তির কবিতা ২০ বছরের তরুণ কবির। এই হৃদপাথরের নাম দিয়েছিলেন ‘‘পাষাণহৃদয়’। সম্ভবত কবির গড়া যা একমাত্র ভাস্কর্য।
অবশ্য জ্যেতিদাদার স্ত্রী কাদম্বরীদেবী ছাড়া কার উদ্দেশেই বা কবিতার ছন্দে এমন নিবেদন করতে পারেন তরুণ রবীন্দ্রনাথ? লিখতে পারেন ? আমার পাষাণ হৃদয় কেটে, নিজের হাতে এই লেখা মুছতে পারবে কি অশ্রুধারা! কাদম্বরীদেবীর সঙ্গে কবির ‘সখ্য’ নিয়ে আজও আলোচনায় মশগুল রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞরা।
বউঠানের মৃত্যুর পর নামকরণ করা সেই হৃদয়াকৃতির শিলাকাব্য উপহার পেয়েছিলেন কবির সাহিত্যচর্চার নিত্যসঙ্গী ভারতী পত্রিকার সম্পাদক অক্ষয় চৌধুরি। প্রায় দেড়শো বছর পর সেই ভাস্কর্য উঠতে চলেছে নিলামের আসরে। আজ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার অনলাইনে বসছে এই নিলাম।
অবশ্য, কাদম্বরী বউঠানের উদ্দেশে খোদিত এই ‘পাষাণহৃদয়’ নয়, নিলামের আসরে সংগ্রাহকদের মূল আকর্ষণ সমাজতাত্ত্বিক, প্রাবন্ধিক ও সঙ্গীতজ্ঞ ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে কবির নিজের হাতে লেখা ৩৫টি চিঠি। ‘অষ্টগুরু’ সংস্থার এই নিলামে যার দাম পাঁচ থেকে সাত কোটি টাকা উঠবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। ‘পাষাণহৃদয়’-এর দাম উঠতে পারে ৫৫ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা। তবে ‘ন্যাশনাল আর্ট ট্রেজর’ হিসাবে চিহ্নিত হওয়ায় এই চিঠি বা ভাস্কর্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
নিলামের এই আসরে উঠছে মাদার টেরিজা ও মহাত্মা গান্ধীকে একই ফ্রেমে রেখে এম এফ হুসেনের আঁকা একটি ছবিও। যে ছবির দাম দুই থেকে তিন কোটি টাকা উঠবে বলে ধারণা অষ্টগুরু কর্তৃপক্ষের।