অভিষেককে দু’মাসের মধ্যে জোড়া চিঠি আয়কর দফতরের! ‘কপি’ করে বিলি করবেন, জানালেন তৃণমূল সাংসদ
আনন্দবাজার | ২৬ জুন ২০২৫
৫০ দিনের ব্যবধানে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পর পর দু’বার চিঠি পাঠিয়েছে আয়কর দফতর। একটি সভা থেকে অভিষেক নিজে সে কথা জানিয়েছেন। সেই চিঠি এ বার প্রবীণ নাগরিকদের বাড়ি বাড়ি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল। অভিষেক জানিয়েছেন, নিজের সংসদীয় এলাকায় ৭৬ হাজার প্রবীণ নাগরিককে অর্থসাহায্য করেছেন তিনি। এই ‘শ্রদ্ধার্ঘ্যে’ বিজেপি বাধা দিতে চায়। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তাঁর কাছে পর পর দু’বার চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিজেপির এই ‘স্বরূপ’ সকলের সামনে তুলে ধরতেই চিঠিগুলি প্রবীণদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। দুর্গাপুজোর মধ্যে চিঠিগুলি যাতে এই ৭৬ হাজার মানুষের বাড়িতে পৌঁছে যায়, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সেই বন্দোবস্ত করতে বলেছেন।
জনসভা থেকে বিজেপিকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, ‘‘আমি কেন ডায়মন্ড হারবারের ৭৬ হাজার প্রবীণ নাগরিককে শ্রদ্ধার্ঘ্য দিয়েছি? বিজেপি থেকে, আয়কর দফতর থেকে আমাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কেন টাকা দিয়েছি, ওরা জানতে চেয়েছে। যাতে আপনাদের এই শ্রদ্ধার্ঘ্য এবং বার্ধক্য ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। এটাই বিজেপির আসল চেহারা।’’ আয়কর দফতরের চিঠিতে ৭ জানুয়ারি এবং ২৪ ফেব্রুয়ারির তারিখ লেখা আছে বলে জানান অভিষেক। ৫০ দিনের ব্যবধানে লেখা এই দুই চিঠিই ডায়মন্ড হারবারের প্রবীণ নাগরিকদের বাড়িতে তিনি পৌঁছে দিতে চান। অভিষেক বলেন, ‘‘৫০ দিনের ব্যবধানে আমাকে দুটো চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারণ আমি গরিব মানুষের হাতে অর্থ তুলে দিতে সক্ষম হয়েছি। মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। গরিব মানুষের হাতে এক হাজার টাকার ভাতা পৌঁছে দিতে পেরেছে আমাদের সরকার। তাই এই চিঠি।’’ দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের যে কর্মী-সমর্থকেরা এই সভায় এসেছেন, সকলকে বলছি, পুজোর মধ্যে, অর্থাৎ আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ৭৬ হাজার মানুষের বাড়িতে এই চিঠির কপি আমি পাঠাব।’’
অভিষেকের অর্থসাহায্য যাঁরা পেয়েছেন, মূলত তাঁদের হাতেই আয়কর দফতরের চিঠির কপি তুলে দিতে চান সাংসদ। জানাতে চান, তাঁর পদক্ষেপে কেন্দ্রীয় সরকার বাধা দিতে চাইছে। অভিষেক বলেন, ‘‘আমি আপনাদের পরিষেবা দিতে চাই। রাজ্য সরকার পরিষেবা দিতে চায়। কিন্তু বিজেপি তাতে বাধা দিচ্ছে। কী ভাবে এই রাজ্যের উন্নয়ন বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে, কী ভাবে আপনার টাকা নিয়ে ওরা গুজরাতে বা উত্তরপ্রদেশে চলে যেতে পারে, বিজেপি সেই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’’
জানুয়ারি মাস থেকে নিজের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের প্রবীণদের জন্য বার্ধক্য ভাতা প্রকল্প চালু করেন অভিষেক। ওই টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলে আয়কর দফতরকে চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। আয়কর দফতরের গোয়েন্দা এবং ফৌজদারি তদন্ত বিভাগের প্রিন্সিপাল ডিরেক্টর সুনীতা বাইন্সলার কাছে যায় শুভেন্দুর চিঠি। অভিষেকের এই কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই ‘চুরির টাকা বিলি হচ্ছে’ বলে প্রচারে নামে বিজেপি। এ নিয়ে ইডি, সিবিআই হতে পারে বলে আগেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অভিষেক। এর পর ৫০ দিনের মধ্যে দু’বার আয়কর দফতর থেকে চিঠি পান অভিষেক।