বুধবার ডায়মন্ড হারবারের সাতগাছিয়ার সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে নাম না করে নিশানা করেছিলেন সাংসদ ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বৃহস্পতিবার, কলকাতায় রাজ্য বিজেপি কার্যালয়ে হওয়া সাংবাদিক সম্মেলনে অভিষেকের নাম করে তোপ দাগলেন শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তাই নয়, বক্তব্যের মাঝে ৫ সেকেন্ডে টানা ১০ বার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করলেন তিনি। আর তা নিয়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতাকে তীব্র কটাক্ষ করলেন অভিষেক।
বৃহস্পতিবার শুভেন্দুর সাংবাদিক বৈঠকের ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক লিখেছেন, ‘কলিযুগে ভগবানের নাম জপ করা হয়। বিজেপি নেতারা মনে করেন, আমার নাম জপ করে তাঁরা মুক্তি পাবেন কিংবা বাড়তি কয়েকটি আসন পাবেন! কিন্তু ওঁদের জানাই, এর কোনওটাই পশ্চিমবঙ্গে হবে না।’
বিজেপি–র রাজ্য দপ্তরে বসে বিরোধী দলনেতা এ দিন বলেন, ‘কেউ ৭ লক্ষ ১৫ হাজার ভোটে জেতে? যাকে ইডি ২৫ বার ডেকেছে, পাঁচবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, সে বড় বড় কথা বলছে? ইভিএমে সেলোটেপ লাগিয়ে দিয়েছিল!জাহাঙ্গির (দক্ষিণ ২৪ পরগনার তৃণমূল নেতা) কী করে ফলতায় ভোট করেছিল লোকে জানে না? ডায়মন্ড হারবারে গৌতম অধিকারী ও শামিম কী ভাবে ভোট করেছে লোকে জানে না? মহেশতলা–বজবজে কী হয়েছে কেউ জানে না? এটা চলবে না। ডায়মন্ড হারবার মডেল আমরা ফেল করাব।’ ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে লোকসভা ভোটের বিভিন্ন বুথের অন্তত পাঁচশো ভিডিয়ো তাঁর কাছে আছে বলেও শুভেন্দু এ দিন দাবি করেছেন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়াতে বুধবার ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ হিসেবে গত ১১ বছরের উন্নয়নের খতিয়ান প্রকাশ করেছেন অভিষেক। প্রায় সাতশো পাতার ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ নামে বই তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করেছেন। এই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে শুভেন্দুকে আক্রমণ করেছিলেন অভিষেক। শুভেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পরে গেরুয়া শিবির পরপর নির্বাচনে পরাজিত হচ্ছে বলেও খোঁচা দিয়েছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। শুভেন্দু প্রায়ই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে েয ধরনের তির্যক মন্তব্য করেন, তার তীব্র সমালোচনা করে পাল্টা কটাক্ষ করেছিলেন অভিষেক। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘শুভেন্দু দাদা থেকে কাকু, কাকু থেকে জেঠু, জেঠু থেকে দাদু হয়ে গেলেও তৃণমূল বাংলায় আগামী ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকবে।’ এ দিন শুভেন্দু পাল্টা বলেন, ‘২০২১ সালে গিয়ে আমার বাড়ির পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে এসে পকেটে হাত ঢুকিয়ে বলেছিল, তোর বাপকে ডাক। ২০২৩–এর ৩ ডিসেম্বর মিটিং করে বলে এসেছিল, এক মাসের মধ্যে জেলে ঢোকাব!’ এ সব কথা বলার সময়ে শুভেন্দুর মুখে বারবার অভিষেকের নাম উচ্চারিত হওয়ায় তৃণমূলের অন্য নেতারাও বিরোধী দলনেতাকে বিঁধেছেন। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে এক্স হ্যান্ডলে খোঁচা দিয়ে লিখেছেন, ‘এটা অবাস্তব। বাংলায় বিজেপির বিরোধী দলনেতার সিরিয়াস হেল্প দরকার।’